টি এল জয়সওয়াল হাসপাতালে আবদুল সিদ্দিকির দেহ। নিজস্ব চিত্র।
জ্বর শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি করানো হয়েছিল হাওড়ার একটি সরকারি হাসপাতালে। কিন্তু তার পর দিনই হাসপাতালে রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হল ওই রোগীর। দেহে পাওয়া গেল একাধিক আঘাতের চিহ্ন এবং রক্তের দাগ। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার টি এল জয়সওয়াল হাসপাতালে। মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করল জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর। ওই রোগীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, বেলুড় থানার অন্তর্গত জঙ্গি সিং এলাকার বাসিন্দা আবদুল সাদ্দিক (৬০)। পেশায় রিকশাচালক আবদুলকে জ্বর-সর্দি-শ্বাসকষ্ট নিয়ে চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার রাতে ভর্তি করানো হয়েছিল হাওড়ার টি এল জয়সওয়াল হাসপাতালে। বুধবার সকালে হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর খবর পেয়ে বাড়ির লোকজন এসে দেখেন আবদুলের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ও রক্তের দাগ। এর পরেই তাঁর বাড়ির লোকেরা হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের গাফিলতি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে থাকেন।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, আবদুল সাদ্দিক নামে ওই রোগীকে জয়সওয়াল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল মঙ্গলবার রাতে। জ্বর, শ্বাসকষ্ট-সহ একাধিক সমস্যা নিয়ে জরুরি বিভাগে তাঁকে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন। এর পর মঙ্গলবার সকালে তাঁকে হাসপাতালের কয়েকজন কর্মী রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালের বাইরে পড়ে থাকতে দেখেন। সঙ্গে সঙ্গে ওই কর্মীরা চিকিৎসার জন্য তাঁকে হাসপাতালের ভিতরে নিয়ে এলেও বাঁচানো যায়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছেন, রাতের বেলা ওই রোগী হাসপাতালের ছাদে উঠে পড়েছিলেন। সেখান থেকেই কোনও কারণে তিনি পড়ে গিয়ে থাকতে পারেন।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডঃ নিতাই মন্ডল জানান, আমরা কোনও সম্ভাবনাকেই উড়িয়ে দিচ্ছি না। দেহটিকে মায়নাতদন্তের জন্য নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। হাসপাতালের সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার তদন্ত করতে ইতিমধ্যেই কমিটি গঠন করা হয়েছে। সবদিক খতিয়ে খুব দ্রুত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বুধবার রাতেই মৃতের পরিবারের লোকজন সরকারি এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ এনে বেলুড় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।