পদক হাতে মৌমিতা। —নিজস্ব চিত্র।
তাঁর বয়সি আর পাঁচ জন বঙ্গকন্যা যখন দুর্গাপুজোর আনন্দে মেতে, তখন ভিন্ রাজ্যের মাঠে আরও জোরে দৌড়নোর জন্য চোয়াল শক্ত করছিলেন মৌমিতা মণ্ডল। তৃতীয় জাতীয় অনূর্ধ্ব-২৩ অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতায় জোড়া পদক জিতলেন হুগলির মেয়ে। চণ্ডীগড় স্পোর্টস কমপ্লেক্সে গত ২০-২২ অক্টোবর ওই প্রতিযোগিতা হয়। উদ্যোক্তা— চণ্ডীগড় অ্যাথলেটিক অ্যাসোসিয়েশন।
মৌমিতা ১০০ মিটার হার্ডলসে চ্যাম্পিয়ন হন। সোনা জয়ের পথে হারান মহারাষ্ট্রের প্রাঞ্জলি দিলীপ পাতিলকে। লং জাম্পে মৌমিতার স্থান তৃতীয়। কেরলের প্রভাভাঠী পিএস-এর কাছে হেরে এ ক্ষেত্রে ব্রোঞ্জ পদকেই তাঁকে সন্তুষ্ট থাকতে হয়।
বলাগড় ব্লকের জিরাটের কালিয়াগড় নট্টপাড়ায় মৌমিতার বাড়ি। মা-বাবা, দিদিকে নিয়ে সংসার। বাবা সুভাষচন্দ্র মণ্ডল জিরাট স্টেশনের পাশে চায়ের দোকান চালান। সেই আয়েই সংসার চলে। ঘরে অভাব। অভাবকে হারিয়ে মৌমিতার সাফল্যে খুশি তাঁর পরিবার। ২১ বছরের মেয়ের স্বপ্ন, দেশের হয়ে অলিম্পিকে যোগদান। গত দু’বছর ধরে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনে অনুশীলন করছেন মৌমিতা। প্রথমে ছিলেন ওড়িশায়। মাস ছয়েক ধরে মুম্বইতে অনুশীলন চলছে। গত মার্চ মাসে ইস্টার্ন রেলে গ্রুপ-সি’র চাকরি পেয়েছেন। এতে সংসারের কিছুটা সুরাহা হবে বলে তিনি জানান।
গত অগস্ট মাসে উত্তরপ্রদেশের রায়বরেলিতে অল ইন্ডিয়া ইন্টার রেলওয়ে চ্যাম্পিয়নশিপে ১০০ মিটার হার্ডলসে সোনা জেতেন মৌমিতা। বলাগড়ের ক্রীড়াপ্রেমী পবন পণ্ডিত বলেন, ‘‘জোড়া পদক জয়ের খবর শুনেই ফোন করে মৌমিতাকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। আমরা দেখতে চাই, ভারতের জার্সি গায়ে আন্তর্জাতিক স্তরে মৌমিতা মাঠ কাঁপাক।’’ বিডিও (বলাগড়) নীলাদ্রি সরকার বলেন, ‘‘মৌমিতাকে অনেক অভিনন্দন। আগামী দিনের শুভেচ্ছা রইল।’’