শেখ মিখাইল আলম। subrata.42jana@gmail.com
যুদ্ধের কারণে ডাক্তারি পড়া ছেড়ে ইউক্রেন থেকে ফিরে আসতে হয়েছিল হাওড়ার আমতার নারিটের শেখ মিখাইলকে। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে ঋণ পাওয়ার আশ্বাস মিলেছিল। ফের একবার ইউক্রেনেও গিয়েছিলেন। পরে ঋণের প্রক্রিয়ার জন্য দেশে ফিরতে হয়। কিন্তু ঋণ মেলেনি। এখন বাড়িতে বসে স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় ভুগছেন এই যুবক। সাড়ে পাঁচ বছরের পাঠ্যক্রমের মধ্যে তাঁর মাত্র দেড় বছর বাকি।
মিখাইল জানান, বিকাশ ভবনের অনুমোদন পেয়ে তিনি ৮ লক্ষ টাকা শিক্ষাঋণের জন্য আবেদন করেন একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের হাওড়ার ঝিকিরা শাখায়। কিন্তু ব্যাঙ্কে ওই প্রক্রিয়া আটকে থাকায় নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি এবং বাড়ির লোকজন প্রবল দুশ্চিন্তায়।
বিডিও (আমতা ২) পিন্টু ঘরানি বলেন, ‘‘ঋণের আবেদন করার সময় ব্যাঙ্কের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলাম। এখনও কেন ওই ছাত্র ঋণ পেলেন না, খোঁজ নিয়ে দেখব।’’ সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের ঝিকিরা শাখার ম্যানেজার প্রভাতকুমার দোলুই বলেন, ‘‘স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ওই ছাত্রের ঋণের আবেদন সংক্রান্ত ফাইল ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে অনুমোদন এলেই ঋণ দেওয়া হবে। আশা করছি, ঋণের ব্যবস্থা করা যাবে।’’
ডাক্তারি পড়তে ২০১৯ সালে ইউক্রেনে যান মিখাইল। কিন্তু ইউক্রেনে অশান্ত পরিস্থিতির জন্য বাড়িতে ফিরে আসতে হয়। তিনি জানান, সেই সময় এ রাজ্যেই পড়াশোনা শুরুর কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। কিছু দিন কলকাতায় বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে ক্লাসও হয়। পরে রাজ্য সরকারের তরফে শিক্ষাঋণ পাওয়ার আশ্বাসে বুক বাঁধেন তিনি। পড়ার খরচ চালানোর জন্য ব্যাঙ্কে ৮ লক্ষ টাকা ঋণের আবেদন করে ২০২২ সালে আবার ইউক্রেনে যান।
মিখাইলের বাবা, আমতা আদালতের ল’ক্লার্ক শেখ নাসিরউদ্দিন জানান, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বলেছিলেন, ঋণ হাতে পাওয়ার জন্য ব্যাঙ্কে এসে মিখাইলকে সই করতে হবে। সেই মতো গত ২২ অক্টোবর মিখাইল বাড়ি চলে আসেন। নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘‘অশান্ত পরিস্থিতির জন্য রাশিয়া হয়ে ইউক্রেনে যাতায়াত করা যাচ্ছে না। ছেলেকে আসতে হয়েছে অন্য দেশ ঘুরে। সেই দেশের উপর দিয়ে যাওয়ার জন্য ভিসা ছিল ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। সেই সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় ভিসার জন্য নতুন করে আবেদন করতে হবে। সে আর এক হ্যাপা!’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘ব্যাঙ্কের গড়িমসির জন্যই এই পরিস্থিতি হল। খুব মুশকিলে পড়েছি।’’