Uluberia

ডাক্তারি-ছাত্রদের থাকার জায়গা কিসান মান্ডিতে

২০১৩ সালে নিমদিঘিতে প্রায় সাত কোটি টাকা খরচ করে গড়ে তোলা হয়েছিল ওই কিসান মান্ডি। উদ্দেশ্য ছিল, এখানে চাষিরা এসে সরাসরি উৎপাদিত ফসল বিক্রি করবেন।

Advertisement

নুরুল আবসার

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২২ ০৯:৫৩
Share:

উলুবেড়িয়ার কিসান মান্ডি।

ভর্তি শুরু হয়ে গিয়েছে। চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই উলুবেড়িয়ার শরৎচন্দ্র মেডিক্যাল কলেজে পঠনপাঠন চালু হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এখানে হবু চিকিৎসকেরা থাকবেন কোথায়? ছাত্রাবাসই তো নেই। সমস্যার সমাধানে উলুবেড়িয়া-১ ব্লক কিসান মান্ডিকেই ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিল জেলা প্রশাসন। মান্ডির মূল চাতালটিকেই ‘ডর্মিটরি’তে পরিণত করা হচ্ছে। সেখানেই থাকবেন ছাত্রেরা।

Advertisement

ছাত্রীদের জন হাসপাতালের মূল চত্বরে থাকা রাত্রিনিবাসটিকে ব্যবহার করা বলে জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন। তিনি বলেন ‘‘রাত্রিনিবাসটি চারতলা। এটি রোগীর আত্মীয়দের রাতে থাকার জন্য করা হয়েছিল। কিন্তু চালু করা যায়নি। আপাতত সেটিকে ছাত্রীদের থাকার উপযোগী করে গড়ে তোলা হচ্ছে।’’

২০১৩ সালে নিমদিঘিতে প্রায় সাত কোটি টাকা খরচ করে গড়ে তোলা হয়েছিল ওই কিসান মান্ডি। উদ্দেশ্য ছিল, এখানে চাষিরা এসে সরাসরি উৎপাদিত ফসল বিক্রি করবেন। ফলে, তাঁরা ফড়েদের হাত থেকে মুক্তি পাবেন। একটি বড় ছাউনিযুক্ত চাতাল বানানো হয় চাষিদের বসার জন্য। কৃষিজাত সামগ্রী বিক্রি করার জন্য প্রায় ৩০টি পাকা স্টল করা হয়। কিন্তু জেলা প্রশাসনের একাধিক চেষ্টা সত্বেও মান্ডি চালু হয়নি। চাষিরা পণ্য নিয়ে এখানে আসতে রাজি হননি। পাকা স্টলগুলি বেকার যুবকদের মধ্যে বিলি করা হলেও মান্ডি চালু না হওয়ায় বেশিরভাগ স্টল বন্ধ।

Advertisement

পরে ফের প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা খরচ করে মান্ডির ভিতরে খোলা যায়গায় বেশ কিছু ছাউনি করে দেওয়া হয়। সেখানে সপ্তাহে একদিন করে হাট বসে। এ ছাড়াও মান্ডিতে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে সরকার চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনে। কার্যত ফাঁকা পড়ে থাকায় মান্ডিটি নানা রকম অসমাজিক কাজের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ।

এমন জায়গায় কেন হচ্ছে ছাত্রাবাস?

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, অনুমোদন পাওয়ার পরেই তড়িঘড়ি মেডিক্যল কলেজ চালু করতে গিয়ে এর পরিকাঠামোগত অনেক ঘাটতি থেকে গিয়েছে। শুধুমাত্র প্রথম বর্ষের পঠনপাঠন চালানোর মতো ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই অবস্থায় ছাত্রাবাস এখনও করা যায়নি। এই কলেজে মোট ১০০ জন পড়ুয়া প্রতি বছর পড়ার সুযোগ পাবেন। তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। প্রথমে ঠিক হয়েছিল একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে ছাত্রদের রাখা হবে। কিন্তু সরকার যে টাকা ভাড়া দেবে, সেই টাকায় কোনও বাড়ি-মালিক বাড়িভাড়া দিতে রাজি হননি। তাই কিসান মান্ডি নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর, হাসপাতাল চত্বর এবং নিমদিঘিতেই দু’টি ১১তলা ভবন তৈরির কাজ চলছে। সেই দু’টি ভবন তৈরি হয়ে গেলে ছাত্রাবাস, কলেজ এবং হাসপাতালের সমস্যা মিটে যাবে। কিন্তু সেই দু’টি ভবন তৈরির কাজ শেষ হতে অন্তত দু’বছর সময় লাগবে।

জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘দু’বছরে অন্তত দু’টি ব্যাচের জন্য ছাত্রাবাসের দরকার হবে। আপাতত দু’বছরের জন্য কিসান মান্ডিটি ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, এখানে ছাত্রাবাস গড়া হলে অসামাজিক কাজকর্ম বন্ধ হবে। ছাত্রদের জিনিসপত্রের প্রয়োজনে অনেক দোকান গড়ে উঠবে। জমে উঠবে মান্ডি। ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে যে ধান কেনা হয়, সেটাও ব্যহত হবে না বলে দাবি করে ওই প্রশাসনিক কর্তা জানান, পাশে ধান কেনার জায়গা করে দেওয়া হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement