পান্ডুয়ায় তৃণমূলের এই সভা ঘিরেই বিতর্ক। ছবি: সুশান্ত সরকার
দলের ব্লক সংগঠনের কর্মিসভা। অথচ ব্লক সভাপতি গরহাজির। তাঁর ঘনিষ্ঠ কয়েক জন নেতাও অনুপস্থিত। রবিবার দুপুরের এই কর্মসূচি নিয়ে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জল্পনা ফের উসকে উঠেছে শাসক দল তৃণমূলের অন্দরে। পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে ওই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। ফলে, নেতাদের অনেকের অনুপস্থিতির বিষয়টি তৃণমূল নেতৃত্বকে ভাবাচ্ছে।
পান্ডুয়ার একটি প্রেক্ষাগৃহে তৃণমূলের ওই সভা হয়। দলের শ্রীরামপুর-হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি স্নেহাশিস চক্রবর্তী, চেয়ারপার্সন অসীমা পাত্ররা সভায় উপস্থিত ছিলেন। স্নেহাশিস বলেন, ‘‘আমি সবাইকে কর্মিসভায় আসার আহ্বান জানিয়েছিলাম। কেন তাঁরা আসেননি, খোঁজ নিচ্ছি।’’
পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সঞ্জয় ঘোষ, পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আনিসুল ইসলাম প্রমুখ ছিলেন। তবে, ব্লক তৃণমূল সভাপতি অসিত চট্টোপাধ্যায়কে দেখা যায়নি। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি চম্পা হাজরা, শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সঞ্জীব ঘোষকেও দেখা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে কর্মীদের মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়ে যায়। পান্ডুয়ায় দলের গোষ্ঠী সমীকরণে অসিত, চম্পা, সঞ্জীবরা এক দিকে। আনিসুল, সঞ্জয়রা বিপরীত গোষ্ঠীর বলে পরিচিত।
গরহাজিরা নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে অসিত বলেন, ‘‘ব্লকে ১৬টি পঞ্চায়েত। তার মধ্যে বেশ কয়েক জন অঞ্চল সভাপতিও কর্মিসভায় যাননি। না যাওয়ার কারণ নিয়ে সাংবাদিকদের কিছু বলব না। যা বলার, দলকেই বলব।’’ একই কথা বলেন চম্পা এবং সঞ্জীব। সভায় স্নেহাশিস কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, তাঁরা যেন ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের প্রচার করেন। তবে, নেতাদের একাংশ অনুপস্থিত থাকায় দলের অন্দরে যে অনৈক্যের সুর বাজছে, তৃণমূলের অনেকেই তা মানছেন। দলের স্থানীথয় এক নেতার কথায়, ‘‘দলে দুই গোষ্ঠীর আকচাআকচি তো আজকের নয়। নতুন করে সেই লড়াই ফিরে এল মনে হচ্ছে।’’ সঞ্জয়ের অবশ্য দাবি, ‘‘১৬টা পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান, অঞ্চল সভাপতিরা কর্মিসভায় ছিলেন।
তৃণমূল সূত্রে খবর, শনিবার সন্ধ্যায় পান্ডুয়ায় এসে স্নেহাশিস দলীয় কার্যালয়ে সঞ্জয়ের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ একান্তে বৈঠক করেন। অসিত ঘনিষ্ঠদের দাবি, কর্মিসভায় কারা থাকবেন, সে বিষয়ে দু’জনের আলোচনা হয়। অসিতের সঙ্গে জেলা নেতৃত্ব এ ব্যাপারে আলোচনাই করেননি বলে তাঁর অনুগামীদের ক্ষোভ। কর্মিসভায় অসিত-চম্পা এবং তাঁদের অনুগামীদের অনুপস্থিতির পিছনে এটাই কারণ বলে দলের একাংশের ব্যাখ্যা।
স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী রত্না দে নাগও সভায় ছিলেন না। তিনি বলেন, ‘‘বিশেষ কাজ থাকায় যেতে পারিনি।’’