ফাইল চিত্র।
রাজ্যে গত কয়েক দিনে হু হু করে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ফের অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হল হাওড়ার মঙ্গলাহাট। অতিমারি আবহে এই নিয়ে তিন বার অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ হল এশিয়ার বৃহত্তম এই হাট। বৃহস্পতিবার হাওড়ার জেলাশাসক মুক্তা আর্য, পুলিশ কমিশনার সি সুধাকর ও পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী মঙ্গলাহাট নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়, রবিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত হাওড়া ময়দান চত্বরে হওয়া এই হাট অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ থাকবে। কবে ফের হাট বসবে, তা নোটিস দিয়ে জানানো হবে।
গত বছরের শেষ দিন থেকে হাওড়া জেলায় সংক্রমণের লেখচিত্র ঊর্ধ্বমুখী হলেও মঙ্গলাহাটে কোভিড-বিধি মানতে দেখা যায়নি কাউকেই। এর পরেই গত মঙ্গলবার মঙ্গলাহাটে বিশেষ অভিযান চালিয়ে বিধিভঙ্গের জন্য ১২ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু এই হাট যেখানে বসে, তার আশপাশেই জেলা প্রশাসনের একাধিক সদর দফতর, পুলিশ কমিশনারেট, হাওড়া পুর ভবন থাকায় কী ভাবে এখনও হাট চালু রাখা হয়েছে, সেই প্রশ্ন উঠছিল। তার পরেই হাট নিয়ে বৈঠকে বসেন প্রশাসনিক ও পুরকর্তারা।
এ দিন হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয়বাবু বলেন, ‘‘যেখানে মঙ্গলাহাট বসে, তার সামনেই হাওড়া জেলা হাসপাতাল। সেখানে সাধারণ রোগীদের পাশাপাশি করোনা রোগীদের জন্যও শয্যা রয়েছে। হাটে প্রচুর জনসমাগম হওয়ায় সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকছে। তাই সেটি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’
এ দিকে, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা না করেই মঙ্গলাহাট বন্ধের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মঙ্গলাহাট সমন্বয় ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সম্পাদক কানাই পোদ্দার। তাঁর কথায়, ‘‘সব হাট খোলা থাকলেও কেন তড়িঘড়ি মঙ্গলাহাট বন্ধের সিদ্ধান্ত, তা জানতে চাই।’’ অন্য দিকে, পশ্চিমবঙ্গ বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির তরফে কামাখ্যা সাহা ও পরিমল রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘এ তো এক যাত্রায় পৃথক ফল! বাকি সব হাট খোলা, অথচ হাওড়ার হাট বন্ধ করা হচ্ছে। এটা প্রশাসনের ঠিক সিদ্ধান্ত হল না।’’
হাওড়া জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘এর আগের ঢেউগুলিতে যেখানে হাওড়া হাট বসে, সেখানে সংক্রমণ বেশি ছড়িয়েছিল। হাওড়া হাসপাতাল বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল প্রশাসন। এ বার পরিস্থিতি আরও মারাত্মক। তাই আগেই হাট বন্ধ করা হল।’’