চুরির সেই দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত।
কথায় বলে, ‘‘অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ।’’ তার স্পষ্ট উদাহরণ পাওয়া গেল হাওড়ার চ্যাটার্জিহাট থানার একটি ক্লাবের কালীপুজোর মণ্ডপে। কালীকে ভক্তিভরে প্রণাম করেই তাঁর গা থেকে গয়না খুলে নিয়ে পালিয়েছিলেন এক যুবক। যদিও সিসি ক্যামেরার জন্য সব পরিকল্পনা চৌপাট হয়ে গেল। কালী মূর্তি থেকে গয়না চুরি করার অভিযোগে গ্রেফতার হলেন ওই যুবক।
সোমবার কালীপুজোর রাতে ঠাকুর দেখতে বেশ ভিড় ছিল চ্যাটার্জিহাট সিজন সঙ্ঘ ক্লাবের মণ্ডপে। ৫৮তম বছরে পা দিয়েছে ক্লাবের পুজো। তাই জাঁকজমক ছিল ভালই। ধুমধাম করে পুজো মিটেছে। কিন্তু রাতেই শুরু হল শোরগোল। হঠাৎ উদ্যোক্তাদের চোখে পড়ে কালীর গায়ে গয়না নেই! শুরু হয় হাঁকডাক, ছোটাছুটি। কোথাও কাউকে দেখতে না পেয়ে তড়িঘড়ি খবর দেওয়া হয় পুলিশে। পরে সিসি ক্যামেরা দেখে চোখ কপালে ওঠে পুলিশের। দেখা যায়, ভক্তিভরে প্রণাম করার পর কালী গা থেকে সমস্ত গয়না খুলে নিচ্ছেন এক যুবক!
সিসি ক্যামেরার যে ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, ওই সময় মণ্ডপ ফাঁকাই ছিল। সেই সময় কালো জামা, কালো ট্রাউজার্সে এক যুবককে ঢুকতে দেখা যায়। পায়ে স্নিকার্স। মণ্ডপে ঢুকেই কালী মূর্তির সামনে দাঁড়ান তিনি। মণ্ডপে মাইকে বাজছে বাংলা গান, ‘যায় রে, যায় রে, বেলা যে বয়ে যায় রে...।’
ওই যুবক দুই হাত জড়ো করে প্রণাম করেন। তার পর যে কাণ্ডটি ঘটালেন, তা চমকে দেওয়ার মতো। দেখা গেল, এদিক-ওদিক এক বার দেখে নিয়ে ঝপ করে কালী মূর্তির মাথায় হাত চলে যায় তাঁর। কপালের দিক থেকে একটি গয়না খুলে পকেটে ভরে নেন। মণ্ডপে ঘোরাঘুরি করতে করতেই একের পর এক গয়না খুলে আবার স্বাভাবিক ভাবে হেঁটে হেঁটে মণ্ডপ থেকে বেরিয়ে যান সেই ‘দর্শনার্থী’।
স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, ওই বারোয়ারি পুজোয় প্রতিমার গায়ে প্রায় লক্ষাধিক টাকার সোনার গয়না ছিল। তাই কালীর গয়না চুরির খবর শুনে শোরগোল পড়ে যায়। সিসিটিভি ফুটেজ দেখার পর চোরকেও চিনতে পারেন কেউ কেউ। এলাকার এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘হাওড়ার বোষ্টম পাড়া এলাকায় ওই যুবকের বাড়ি। এলাকার লোকজন ওকে চিনি পুটপুট নামে।’’ তাঁর দাবি, দুষ্কৃতী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগ পুটপুটের বিরুদ্ধে আগেও অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ সূত্রে খবর, পুটপুটের বাড়ি থেকেই সমস্ত গয়না উদ্ধার হয়েছে। তার পর অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।