Jagaddhatri Puja

পুরুষেরাই ঘোমটা টেনে বরণ করেন জগদ্ধাত্রীকে, পুরনো রীতি এখনও চলছে ভদ্রেশ্বরের তেঁতুলতলায়

প্রতি বছরই বরণে অংশ নেন বাসুদেব মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “সারা বছর এই দিনটার জন্য অপেক্ষা করে থাকি। বেশ ভাল লাগে জগদ্ধাত্রী মাকে বরণ করতে। ২৩১ বছর ধরে এই রীতি চলে আসছে।”

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

ভদ্রেশ্বর শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:৩২
Share:

মহিলাদের মতো শাড়ি পরে তেঁতুলতলার জগদ্ধাত্রী প্রতিমাকে বরণ করছেন পুরুষ সদস্যেরা। সোমবার হুগলির ভদ্রেশ্বরে। —নিজস্ব চিত্র।

মহিলারা নন। মাথায় ঘোমটা টেনে পুরুষ সদস্যেরাই মহিলা সেজে বরণ করেন মা জগদ্ধাত্রীকে। প্রাচীন রীতি মেনেই হুগলি জেলার ভদ্রেশ্বরে তেঁতুলতলার জগদ্ধাত্রী পুজোয় প্রতিমা নিরঞ্জন পর্ব শুরু হয়।

Advertisement

জনশ্রুতি আছে রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের দেওয়ান দাতারাম সুর ভদ্রেশ্বরের গৌরহাটি অঞ্চলের বাসিন্দা ছিলেন। কৃষ্ণনগরের রাজবাড়িতে জগদ্ধাত্রী পুজো হত। সেই পুজো দেখে দেওয়ানের বিধবা কন্যা জগদ্ধাত্রী পুজোর সূচনা করেন গৌরহাটি অঞ্চলে। সেই সময় বনজঙ্গলে ভরা ছিল এলাকা। পরবর্তী কালে গৌরহাটি অঞ্চলের স্থানীয় বাসিন্দারাই পুজোর দায়িত্ব নেন।

শোনা যায় ইংরেজদের সেনাছাউনি ছিল ভদ্রেশ্বর গৌরহাটি এলাকায়। পরপুরুষ, বিশেষত গোরা সৈন্যদের সামনে বাড়ির মেয়েদের বাইরে বেরোনোর অনুমতি দেওয়া হত না। তাদের অন্দরমহলেই রাখা হত। তাই সেই সময়ে জগদ্ধাত্রী পুজোর আচার-অনুষ্ঠান পুরুষেরাই সামলাতেন। এমনকি বাড়ির মহিলারা যে ভাবে বাড়ির ঠাকুরকে বরণ করতেন, ঠিক সে ভাবেই পুরুষেরা প্রতিমাকে বরণ করতেন। সেই পুরনো রেওয়াজ অনুসরণ করে আজও মহিলাদের মতোই শাড়ি পরে, মাথায় সিঁদুর লাগিয়ে, পুরুষ সদস্যেরা বরণডালা নিয়ে জগদ্ধাত্রী প্রতিমাকে বরণ করেন। তার পর রীতি মেনেই শোভাযাত্রা বার করে প্রতি বছর গঙ্গায় বিসর্জন দেওয়া হয়।

Advertisement

প্রতি বছরই বাসুদেব মুখোপাধ্যায় এই বরণে মহিলার বেশে অংশ নেন। তিনি বলেন, “সারা বছর এই দিনটার জন্য অপেক্ষা করে থাকি। বেশ ভাল লাগে জগদ্ধাত্রী মাকে বরণ করতে। ২৩১ বছর ধরে এই রীতি চলে আসছে। এই বছর আমরা মোট ১৫ জন মাকে বরণ করি।” তেঁতুলতলার জগদ্ধাত্রী প্রতিমা এমনিতেই ‘জাগ্রত বিগ্রহ’ হিসাবে বাসিন্দাদের একাংশের কাছে পরিচিত। যদিও এটি চন্দননগরের প্রথম জগদ্ধাত্রী পুজো নয়। পুজোর বয়সের নিরিখে তেঁতুলতলার পুজো তৃতীয় স্থানে রয়েছে। তাই স্থানীয়রা এখানকার জগদ্ধাত্রী প্রতিমাকে ‘সেজো মা’ বলে থাকেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement