বন্ধ হিন্দমোটর কারাখানা লাগোয়া একটি বড় আবাসন প্রকল্পের সামনের নীচু জমি ডাম্পারে মাটি এনে এইভাবেই ভরাট করা হচ্ছে।
বন্ধ হিন্দমোটর কারখানা লাগোয়া নির্মীয়মাণ একটি বড় আবাসন প্রকল্পের আশেপাশে বিঘের পর বিঘে নিচু জমি রয়েছে। অনেক দিন ধরেই সেই জমি ভরাট করে উঁচু করা চলছে। তার জেরে স্থানীয়দের প্রাণ ওষ্ঠাগত।
অভিযোগ, রাত ১০টার পর থেকে ভোর পর্যন্ত ৩০-৩৫ ডাম্পার মাটি ফেলা হয় নিয়মিত। নিচু জমি ভরাট হওয়ায় নিকাশির দফারফা হচ্ছে। ডাম্পার চলার ঘরঘর আওয়াজে রাতের ঘুম উবেছে এলাকাবাসীর। দিন কয়েক আগে কানাইপুর পঞ্চায়েতের গ্রামসভা বৈঠকে বাসিন্দারা এর প্রতিবাদ করেন। এলাকাবাসী একাংশ এবং বিরোধীদের অভিযোগ, ওই কাজের পিছনে শাসক দলের কেষ্টবিষ্টুরা থাকায় প্রতিকার মিলছে না।
স্থানীয় সূত্রের খবর, হুগলির বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও দমদম সহ কলকাতার নানা জায়গা থেকে ডাম্পার বোঝাই করে মাটি এনে ফেলা হচ্ছে। কিছু ডাম্পার কলকাতার দিক থেকে ডানকুনিতে দিল্লি রোড হয়ে টিএন মুখার্জি রোড ধরে মাখলা লোহারপুল থেকে বাঁ দিকের রাস্তা ধরে হিন্দমোটরের ওই জায়গায় চলে যাচ্ছে। কিছু ডাম্পার দিল্লি রোড ধরে পার ডানকুনি থেকে নৈটি রোড হয়ে হিন্দমোটরে ঢুকছে। এই পরিস্থিতিতে রঘুনাথপুর, মাখলার বিস্তীর্ণ এলাকা সহ কানাইপুরের আদর্শনগর বা নৈটির লোকজন জেরবার হচ্ছেন।
আদর্শনগরের বাসিন্দা নগেন্দ্র মাহাতো বলেন, ‘‘নিচু জমি ভরাট হওয়ায় এলাকার নিকাশির সমস্যা হচ্ছে। সারা রাত ডাম্পারের আওয়াজে ঘুমোনোর উপায় নেই। ভারী ডাম্পারে নৈটি রোডের ক্ষতি হচ্ছে। বহু বাচ্চা ওই পথে স্কুলে যায়। মাটির ডাম্পারের জন্য ধুলোর চোটে তারা অসুবিধায় পড়ে। পঞ্চায়েতের কর্তাদের বলেও কিছু হচ্ছে না।’’ কানাইপুরের উপপ্রধান তৃণমূলের ভবেশ ঘোষ বলেন, ‘‘কিছু গ্রামবাসী সমস্যার কথা আমাদের জানিয়েছিলেন। প্রতিকারের জন্য আমরা ইতিমধ্যেই উত্তরপাড়া থানা এবং ডানকুনি থানায় চিঠি দিয়েছি।’’ উত্তরপাড়ার উপ পুরপ্রধান তথা ২১ নম্বর ওয়ার্ডের মাখলার পুরসদস্য খোকন মণ্ডল অবশ্য বলেন, ‘‘বিষয়টি আমার সঠিক জানা নেই। খোঁজনিয়ে বলব।’’
হিন্দমোটরের বাসিন্দা, বিজেপির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা কমিটির সদস্য পঙ্কজ রায়ের অভিযোগ, ‘‘উপ পুরপ্রধানের দলবলই তো সরাসরি ওই কাজে যুক্ত! শাসকদলের মাথারা যুক্ত বলেই পুলিশ হাত গুটিয়ে বসে আছে।’’
চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘দিনে অন্য গাড়ি এবং মানুষের যাতায়াত বেশি থাকে। সে কারণেই সম্ভবত মানুষের সমস্যা এড়াতে ওই গাড়ি রাতে চলছে। রাতে ওই সব গাড়ি চলাচলে নিয়ন্ত্রণের নির্দেশিকা আপাতত নেই। তবে মানুষ যখন সমস্যার কথা বলছেন, বিষয়টি দেখা হবে।’’