এভাবেই বৈদ্যবাটী পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের রজনী মুখার্জি লেনে রাস্তার পাশে থাকা পুকুরটি আবর্জনা ও রাবিশ ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র।
দীর্ঘদিন ধরে ঝোপজঙ্গলে ঢেকে থাকা একটি পুকুর রাতের অন্ধকারে আবর্জনা ও মাটি ফেলে ভরাটের অভিযোগ উঠল বৈদ্যবাটীর ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের রজনী মুখার্জি লেনে। এ নিয়ে সম্প্রতি এলাকাবাসী পুরসভা এবং জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানান। পুলিশের তরফে জায়গাটি সরেজমিনে পরিদর্শন করা হয়। এলাকাবাসীর দাবি, প্রশাসন অবিলম্বে পদক্ষেপ করে পুকুরটিকে আগের অবস্থায় ফেরানোর ব্যবস্থা করুক।
পুরপ্রধান পিন্টু মাহাতো বলেন, ‘‘পুরসভার স্যানিটরি ইনস্পেক্টরকে তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট হাতে এলে, অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ মিললে ভরাটকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ শ্রীরামপুর থানার এক আধিকারিক জানান, যাঁদের বিরুদ্ধে পুকুরের অংশ বোজানোর অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের জমির নথিপত্র নিয়ে থানায় দেখা করতে বলা হয়েছে। ওই কাগজপত্র খতিয়ে দেখে ভূমি দফতরে লিখিত ভাবে জানানো হবে।
শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লক ভূমি দফতরের এক আধিকারিক জানান, বিষয়টি নিয়ে দফতরে কোনও অভিযোগ আসেনি। নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্ত করা হবে। পুকুরের কোনও অংশ ভরাট হয়ে থাকলে আইন অনুযায়ী ভরাটকারীকে নোটিস দিয়ে সেই অংশ খনন করতে বলা হবে। নির্দেশ অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগের আঙুল যাঁদের বিরুদ্ধে, সেই পরিবারের এক সদস্য বলেন, ‘‘আমার বাবা ও কাকা ছাড়াও অনেকেই এই পুকুরের অংশ কিনেছেন। বাবা ও কাকা এখন বাড়িতে নেই। পুলিশ জায়গাটি দেখে গিয়েছে। কাগজপত্র নিয়ে থানায় দেখা করতে বলেছে।’’
স্থানীয়েরা জানান, প্রায় ২৩ কাঠা আয়তনের জলাশয়টি ‘কাঞ্চন পুকুর’ নামে পরিচিত। বছর পনেরো আগেও মাছ চাষ হত। আশপাশের লোকজন পুকুরটি ব্যবহার করতেন। কোনও কারণে হঠাৎ মাছ চাষ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে পুকুরটি ধীরে ধীরে আবর্জনায় ঢেকে যায়। মশা, মাছি, পোকামাকড়, সাপখোপের আঁতুড়ঘর হয়ে ওঠে। এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, পরে তাঁরা জানতে পারেন, স্থানীয় কয়েক জন পুকুরটি ছোট ছোট প্লটে কিনে নিয়েছেন। তাঁদের কাছে একাধিক বার পুকুরটি পরিষ্কারের অনুরোধ করা হলেও তাঁরা শোনেননি।
রাস্তার ধারে থাকা জলাশয়টিকে বর্তমানে পুকুর বলে চেনা দায়। অভিযোগ, বেশ খাটিকটা অংশ ভরাট করে সেখানে ক্লাবঘর, গাড়ি রাখার গ্যারাজ, বাগান ইত্যাদি তৈরি হয়েছে। ক্লাবের একাধিক সদস্য বলেন, প্রয়োজনে তাঁরা ক্লাবঘর সরিয়ে নেবেন। বাকিগুলি সরিয়ে পুকুর আগের অবস্থায় ফেরানোর ব্যবস্থা করুক প্রশাসন। পুকুরের হাল নিয়ে এক মহিলার ক্ষোভ, ‘‘পুরসভা এত খরচ করে ঢাকঢোল পিটিয়ে স্বচ্ছতা নিয়ে অভিযান ও প্রচার চালাচ্ছে। লাভ কী হচ্ছে?’’