Hooghly

কৃষিজমি থেকে বেআইনি ভাবে মাটি কাটার অভিযোগ চাষিদের

চণ্ডীতলার গঙ্গাধরপুরের কিছু চাষি জানান, গত ২৮ মার্চ তাঁরা ডাকযোগে পুলিশ-প্রশাসনে অভিযোগ জানান। সোমবার বিডিও দীপাঞ্জন জানার সঙ্গে দেখা করেও অভিযোগের কথা বলেন।

Advertisement

দীপঙ্কর দে

চণ্ডীগড় শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:৩৫
Share:

চণ্ডীতলার গঙ্গাধরপুরে এ ভাবে মাটি কাটা হচ্ছে। —নিজস্ব চিত্র।

বছর খানেক বন্ধ থাকার পরে হুগলির চণ্ডীতলার নানা জায়গায় আইন না মেনে কৃষিজমি থেকে মাটি কাটার কারবার ফের শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ। এই মর্মে চাষিরা লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন চণ্ডীতলা ১-এর বিডিও, ভূমি দফতর এবং পুলিশে। অভিযোগত্র পাঠানো হয়েছে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবের কাছেও।

Advertisement

চণ্ডীতলার গঙ্গাধরপুরের কিছু চাষি জানান, গত ২৮ মার্চ তাঁরা ডাকযোগে পুলিশ-প্রশাসনে অভিযোগ জানান। সোমবার বিডিও দীপাঞ্জন জানার সঙ্গে দেখা করেও অভিযোগের কথা বলেন। ভোটের মুখে এই ঘটনায় শোরগোল পড়েছে। বিডিও বলেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে ব্লক ভূমি দফতরকে অনুসন্ধান করতে বলা হয়েছে। নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে মাটি কাটা হচ্ছে কি না, তা নিয়ে প্রতিনিয়ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’

চাষিদের একাংশের ক্ষোভ, কৃষিজমি থেকে অনেক গভীর করে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। এমন ভাবে কাটা হচ্ছে, বর্ষার সময় ওই জায়গা পুকুরের চেহারা নেবে। পাশের জমিতে ধস নামবে। তখন সেই জমি কম দামে বেচে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। তাঁদের দাবি, কোনও ক্ষেত্রে চাষি এবং ভূমি দফতরের অনুমতি নিয়ে মাটি কাটা হয়। কোনও ক্ষেত্রে কৃষিজমি কিনে নেন মাটি কারবারিরা। তার পরে ভূমি দফতরের অনুমতি নিয়ে মাটি কাটেন। কিন্তু প্রায় সব ক্ষেত্রেই অনুমতি যতটা, কাটা হয় তার থেকে অনেক বেশি পরিমাণে, অনেক বেশি গভীর করে। পাশের জমির সর্বনাশ হয়। জমি কারবারিদের এই বেআইনি কাজ প্রশাসন দেখেও দেখে না বলে অভিযোগ।

Advertisement

পরিমল পাখিরা নামে এক চাষির কথায়, ‘‘আমার আট বিঘা জমি। পাশের জমির মাটি কাটা হচ্ছে। এমন ভাবে কাটা হচ্ছে, আমার জমিতে ধস নামবে। প্রতিবাদ করায় হুমকি দিয়ে বলা হয়, সরকারি অনুমতি নিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। আমার প্রশ্ন, সরকার কী ভাবে কৃষিজমির মাটি কাটার অনুমতি দেয়? দিলেও নিয়ম মেনে কাজ হচ্ছে কি না, দেখার কেউ নেই?’’ সুর্যকান্ত ঘোষাল নামে এক চাষির ক্ষোভ, ‘‘মিনি ডিপ টিউবওয়েলের বিদ্যুতের তার চুরি করে নিচ্ছে। গরমে ধান চাষ করেছি, জানি না কবে তার চুরি করে নেবে। এই ভাবে চললে আর চাষ করা যাবে না। প্রশাসনের নাকের ডগায় কী ভাবে অনৈতিক কাজ হয়?

অভিযোগ, এই ব্লকের নবাবপুর, ভগবতীপুর, আঁইয়াতেও একই কায়দায় মাটি কাটা হয়। রাতভর বড় বড় যন্ত্র দিয়ে মাটি কাটা চলে। ডাম্পার, ট্রাক্টর বোঝাই করে অহল্যাবাই রোড ধরে বিভিন্ন ইটভাটা-সহ অন্যান্য জায়গায় সেই মাটি চলে যায়।

বিষয়টি নিয়ে সরব বিরোধীরা। শ্রীরামপুরের বিজেপি প্রার্থী কবীরশঙ্কর বসুর অভিযোগ, ‘‘শুধু চণ্ডীতলা নয়, প্রতি পঞ্চায়েত এলাকায় মাটি কাটা, পুকুর ভরাট, জমি দখল হচ্ছে। জমি দখলের সিন্ডিকেট চলছে।’’

শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কৃষিজমি থেকে মাটি কাটার বিষয়ে আমাকে কেউ কিছু বলেননি। এ নিয়ে কোনও অভিযোগ আমি পাইনি। এই প্রথম শুনছি। যেই করে থাকুক, তদন্ত করে পুলিশ-প্রশাসন নিশ্চয়ই পদক্ষেপ করবে।’’ বিজেপির অভিযোগ নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘ভোট এসেছে বলে ওরা গল্প তৈরি করছে। ভোট ঘোষণার আগে তো এ সব বলেনি!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement