শনিবার কলকাতায় দলীয় সভা ছিল আইএসএফের। রানি রাসমণি রোডে নওশাদদের সভায় পুলিশ বনাম আইএসএফ কর্মীদের খণ্ডযুদ্ধে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে এলাকা। —ফাইল চিত্র।
পিরজাদা কাশেম সিদ্দিকির মতো কোনও হুমকি বা হুঁশিয়ারির পথ নিল না ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)। বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি-সহ দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতারির প্রতিবাদে একগুচ্ছ কর্মসূচি ঘোষণা করল তারা। তবে তাদের এই প্রতিবাদ মিছিলে কোনও রাজনৈতিক রং থাকবে না। কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা ছাড়াই কলকাতার বুকে নাগরিক সমাজকে নিয়ে তারা মিছিল করবে। সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে এমনই জানালেন আইএসএফ নেতারা। বুধবারের ওই মিছিল শুরু হবে শিয়ালদহে। শেষ হবে ধর্মতলা মোড়ে।
আইএসএফ নেতাদের কথায়, আদালতের নির্দেশ শিরোধার্য। সেটা মেনেই চলবেন তাঁরা। তবে নওশাদকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে সংবিধান লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। আইএসএফের প্রশ্ন, এমন একটি ঘটনার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন নীরব থাকলেন। কেন এ নিয়ে কোনও মন্তব্যই তিনি করলেন না। তাদের বিধায়কের গ্রেফতারির প্রতিবাদে গণআন্দোলনের কথা বলে আইএসএফ জানিয়েছে, সোমবার রাত ১২টার পর থেকে তাঁদের যে কর্মীদের সামাজিক মাধ্যমে প্রোফাইল রয়েছে, তার ছবি (ডিপি) পরিবর্তন করবেন তাঁরা।
নওশাদের মুক্তির দাবিতে মঙ্গলবার থেকে গ্রামগঞ্জে প্রচার চলবে। তা ছাড়া, পাড়ায় পাড়ায় প্রতিবাদ মিছিল হবে মঙ্গলবার থেকেই। বুধবার বেলা ১টায় কোনও ঝান্ডা ছাড়াই কলকাতায় মিছিল করবে নাগরিক সমাজ। নওশাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আগামী ২৬ জানুয়ারি একটি পথসভার আয়োজন করেছে আইএসএফ। এর পর ২৯ জানুয়ারি বিভিন্ন থানায় স্মারকলিপি জমা দেবে তারা। সে দিন মিছিলে থাকা কর্মী এবং সমর্থকদের মুখে কালো কাপড় বাঁধা থাকবে। মৌনী মিছিলে তৃণমূল এবং বিজেপি বাদে সমস্ত রাজনৈতিক দলকে একত্র হওয়ার আহ্বান করেছে তারা।
গত শনিবার কলকাতায় দলীয় সভা ছিল আইএসএফের। রানি রাসমণি রোডে নওশাদদের সভায় পুলিশ বনাম আইএসএফ কর্মীদের খণ্ডযুদ্ধে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে এলাকা। ব্যাপক লাঠিচার্জ করে পুলিশ। ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল। পুলিশের দাবি, বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। গ্রেফতার হন বিধায়ক নওশাদ। এই ঘটনার নিন্দা করে রাজ্যব্যাপী প্রতিবাদ কর্মসূচির আহ্বান জানিয়েছে গত বিধানসভা ভোটে আইএসএফের জোটসঙ্গী সিপিএম।
অন্য দিকে, নওশাদের গ্রেফতারিতে হুমকির সুর শোনা গিয়েছে এক পিরজাদার মুখে। তিনি ‘কলকাতা অচল’ করে দেওয়ার ডাক দিয়েছেন। তবে আইএসএফ চাইছে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ।