—প্রতীকী চিত্র।
এ যেন রক্তদান শিবির ঘিরে বিজেপির দুই গোষ্ঠীর প্রতিযোগিতা!
শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিন উপলক্ষে শনিবার একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছিল হাওড়া গ্রামীণ জেলা বিজেপি। উলুবেড়িয়ার মনসাতলায় দলীয় কার্যালয়ে সেই শিবিরের ১৫০ মিটারের মধ্যে দলের কিছু নেতা আরও একটি রক্তদান শিবির আয়োজন করায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ফের সামনে এল। কোন শিবিরে তাঁরা যাবেন, তা নিয়ে বিভ্রান্ত হলেন সাধারণ কর্মীদের অনেকেই।
বিজেপির একটি সূত্রের খবর, দলীয় কার্যালয়ে যে শিবিরটি হয়, তার অন্যতম উদ্যোক্তা দলের গ্রামীণ জেলা কমিটির সভাপতি অরুণউদয় পাল চৌধুরী। সেখানে রক্তদান করেন ৭৪ জন কর্মী। রক্তদাতাদের হাতে গাছের চারা তুলে দেওয়া হয়। দুপুরে ছিল মাংস-ভাত খাওয়ার আয়োজন। অন্য শিবিরটির অন্যতম আয়োজক দলের প্রাক্তন গ্রামীণ জেলা সভাপতি অনুপম মল্লিক। শিবিরে ছিল দাঁত এবং চক্ষু পরীক্ষার ব্যবস্থাও। এখানে উপস্থিত ছিলেন দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও প্রাক্তন সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। রক্ত দেন ১০৪ জন। এখানে মাছ-ভাত খাওয়ানোর পাশাপাশি রক্তদাতাদের একটি করে কফি কাপ উপহার দেওয়া হয়। এই উপহার দেওয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, রক্তদান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সমাজকর্মীরা মনে করেন, এই ধরনের শিবিরে উপহার দেওয়া হলে রক্তদান আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। অনেকে উপহারের লোভে রোগ লুকিয়ে রক্ত দিতে পারেন। অনুপম অবশ্য দাবি করেন, ‘‘কোনও কর্মী হয়তো কয়েক জনকে খুশি করতে দিতে পারেন। কিন্তু উদ্যোক্তাদের তরফে কাউকে উপহার দেওয়া হয়নি। আমরা এর বিরুদ্ধে।’’
কেন দু’টি শিবিরের প্রয়োজন পড়ল?
অনুপমের দাবি, ‘‘দলের জেলা কমিটির পক্ষ থেকে আমাদের কিছু জানানোই হয়নি। আমন্ত্রণ পাইনি। তাই রাজ্য কমিটির নির্দেশে রক্তদান শিবির করেছি।’’ দলের বর্তমান গ্রামীণ জেলা সভাপতি অরুণউদয়ের পাল্টা দাবি, ‘‘সর্বসম্মত ভাবে সিদ্ধান্ত
নিয়ে এই কর্মসূচি নেওয়া হয়। সমাজমাধ্যম ও নেতৃত্বকে হোয়াটসঅ্যাপে জানানো হয়েছে। তারপরেও যদি কেউ বলেন জানানো হয়নি, তা হলে সেটা ঠিক নয়।’’
তবে, কে কোন শিবিরে গিয়ে রক্ত দেবেন, তা নিয়ে সাধারণ বিজেপি কর্মীদের অনেককেই বিভ্রান্ত দেখিয়েছে। কয়েকজন দলের বর্তমান অবস্থা নিয়ে ক্ষোভও উগরে দিয়েছেন। এক কর্মী বলেন, ‘‘দলকে ভালবাসি। অথচ, জেলা নেতৃত্ব নিজেদের মধ্যে গোষ্ঠী তৈরি করছেন। সাধারণ মানুষ উলুবেড়িয়া লোকসভায় বিজেপিকে পাঁচ লক্ষের বেশি ভোট দিয়েছেন। কিন্তু ভোটার ও কর্মীদের কথা না ভেবে নেতারা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব শুরু করেছেন। এতে শাসক দলের সুবিধা হচ্ছে।’’
আর এক বিজেপি কর্মীর প্রশ্ন, ‘‘দু’টো আলাদা রক্তদান শিবির করে নেতারা সাধারণ মানুষের কাছে কোন বার্তা দিতে চাইছেন?’’