Mamata Banerjee

নির্দল প্রার্থীর প্রচারে মমতার নামে জয়ধ্বনি

কী করবেন বুঝে পাচ্ছেন না তৃণমূল প্রার্থী তৃপ্তি। তিনি বলেন, ‘‘মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। অথচ, দলের পক্ষ থেকে এখনও কোনও আপত্তি করা হয়নি।”

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়  ও পীযূষ নন্দী

আরামবাগ শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৯:০১
Share:

প্রচারে বেরিয়েছেন আরামবাগ পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী লুৎফা বেগম। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।

প্রার্থী নির্দল। প্রতীক ‘জোড়া পাতা’।

Advertisement

অথচ, পথে-প্রচারে তাঁর হাতিয়ার কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী, লক্ষ্মীর ভান্ডার, রূপশ্রী, খাদ্যসাথী-সহ তৃণমূলের নানা উন্নয়ন সংক্রন্ত পোস্টার! ঘন ঘন ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ’ বলে জয়ধ্বনিও!

আরামবাগের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী লুৎফা বেগমের এই প্রচার দেখলে চমক লাগতে পারে। ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী তৃপ্তি কুন্ডু এবং তাঁর দলের নেতারাও এতে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছেন। তাঁদের প্রচারের বিষয় ‘হাইজ্যাক’ হয়ে যাচ্ছে!

Advertisement

লুৎফা বুধবার থেকে প্রচার শুরু করেছেন। তাঁর দাবি, “প্রচারে শুরু থেকেই ঝড় বইছে। এই ওয়ার্ডের আসল তৃণমূল নেতা আমার স্বামী। তাঁরই এ সব বুদ্ধি।” এ ভাবে প্রচারে কোনও অন্যায় দেখছেন না লুৎফার স্বামী মোশারফ হোসেন। তিনি বলেন, “আমি দলের দুর্দিনের কর্মী। এখনে স্থানীয় কিছু নেতা টিকিট দেওয়ার ক্ষেত্রে দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে ভুল বুঝিয়ে আমাকে বঞ্চিত করেছে। দলের টিকিট পাওয়া প্রার্থীকে কারও পছন্দ নয়। দলকে বাঁচাতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমস্ত উন্নয়নের কথা বলে ভোট চাইছি। এটাই করে যাব।”

কী করবেন বুঝে পাচ্ছেন না তৃণমূল প্রার্থী তৃপ্তি। তিনি বলেন, ‘‘মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। অথচ, দলের পক্ষ থেকে এখনও কোনও আপত্তি করা হয়নি।” তৃণমূল শহর কমিটির সভাপতি তথা ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী প্রদীপ সিংহরায় বলেন, “নোংরামি হচ্ছে। বিষয়টা দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন।”

জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের কোনও অসুবিধা নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা উন্নয়ন করেছেন, প্রত্যেককেই স্বীকার করতে হবে। দলের টিকিট না পেয়ে ওঁরাই বরং বোকামি করছেন। এ ভাবে মানুষকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচার মানেই মানুষ ইভিএমে তাঁর নিজের তৈরি প্রতীক জোড়াফুলে ছাপ দেবেন।”

শুধু ‘জোড়া পাতা’ নয়, হুগলির ১২টি পুরসভার নানা ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থীদের কেউ ‘উদীয়মাণ সূর্য’, কেউ ‘তালাচাবি’-সহ হরেক প্রতীকে দাঁড়িয়ে পড়েছেন। তবে, ‘জোড়া পাতা’ প্রতীকই বেশি।

বৈদ্যবাটীর ২০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতা হরিদাস পাল নির্দল প্রার্থী হয়েছেন। তাঁরও প্রতীক ‘জোড়া পাতা’। তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে দল করছি। তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলর দ্বিতীয় বার জেতার পরে মানুষের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখেননি। কোনও কাজে এলাকাবাসী তাঁকে পাশে পাননি। আমাকে এলাকার বাসিন্দারা উৎসাহ দিলেন। তাঁদের কথাতেই দাঁড়িয়েছি।’’ ওই পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী দেবরাজ দত্তও ‘জোড়া পাতা’ প্রতীকে লড়ছেন। তিনি বলেন, ‘‘শাসক দলের প্রার্থীকে এলাকাবাসী দু’বার পুরভোটে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এলাকার নাগরিকরা স্বচ্ছ ভাবমূর্তির, দুর্নীতি ও সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত নন, এমন মুখ চাইছেন। দল প্রার্থী না করায় দলের কর্মী-সমর্থকরাই আমাকে নির্বাচনে দাঁড় করিয়েছেন।’’ উত্তরপাড়াতেও ১২ জন নির্দল হিসেবে লড়ছেন। তাঁদেরও প্রতীক ‘জোড়া পাতা’।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement