ছেলেকে বিক্রি করে আবার পুলিশের কাছে গেলেন মা। —প্রতীকী চিত্র।
স্বামীর ঘর ছেড়ে প্রেমিকার হাত ধরে এক কাপড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন। সঙ্গে ছিল একরত্তি সন্তান। প্রেমিকের সঙ্গে নেশা করে সেই সন্তানকেও বিক্রি করে দিয়েছিলেন মা। নেশা কাটতে শুরু হাহাকার। ছোটেন পুলিশের কাছে। অবশেষে পুলিশের তৎপরতায় উদ্ধার হল খুদে। সামনে আসে শিশু পাচারকাণ্ডে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। হুগলির ডানকুনির ঘটনা।
পুলিশ সূত্রে খবর, বছর সাতেক আগে উত্তর ২৪ পরগনার নিউ ব্যারাকপুর বিলকান্দার বাসিন্দা বাবু মণ্ডলের সঙ্গে বিয়ে হয় পূজার। তাঁদের ৪ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। তবে ৫ মাস আগে স্বামীর ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যান পূজা। প্রেমিক সুজিত খানের সঙ্গে ডানকুনিতে চলে যান তিনি। ডানকুনির মনোহরপুর মল্লিকপাড়া এলাকায় একটি ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন। সেই প্রেমিকই পূজার সন্তানকে বিক্রির ষড়যন্ত্র করেন বলে অভিযোগ।
পুলিশকে পূজা জানান, তাঁকে একটা জায়গায় নিয়ে গিয়ে নেশা করান সুজিত। নেশার ঘোরে তিনি একটি কাগজে টিপ সই দেন। বিনিময়ে চল্লিশ হাজার টাকা পান। এর পর তাঁর ছেলেকে জনৈক আজিজুলের কাছে বিক্রি করে দেন প্রেমিক সুজিত। এখন নিজের ভুল বুঝতে পেরে ছেলেকে ফেরত চাইছেন।
তদন্তে নেমে আজিজুলকে আটক করে পুলিশ। জানা যায়, দেড় লক্ষ টাকায় এক নিঃসন্তান দম্পতিকে ওই সন্তান বিক্রি করেছিলেন তিনি। আজিজুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে খুরসিদা বেগম নামে এক মহিলার খোঁজ পায় পুলিশ। হুগলিরই চণ্ডীতলা এলাকায় তাঁর জিম্মাতেই শিশুটি ছিল। সেই বাড়ি থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। ওই দু’জনকে গ্রেফতার করে ডানকুনি থানার পুলিশ।
ওই শিশুর বাবা বাবু বলেন, ‘‘মাস পাঁচেক আগে পূজা বাড়ি থেকে চলে যায়। আমি রিকশা চালাতাম। ছেলেকে নিয়ে ভাল থাকবে বলে অন্য এক জনের সঙ্গে চলে যায় ও। আমি তিন মাস আগে পুলিশে অভিযোগ করেছিলাম। যখন জানতে পারলাম আমার ছেলেকে বিক্রি করে দিয়েছে, তখন ডানকুনিতে এলাম। পুলিশের সাহায্য চাইলাম।’’
এই প্রসঙ্গে চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার অমিত পি জাভালগি বলেন, ‘‘শিশুটিকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল। জানা যায়, নিঃসন্তান কোনও দম্পতি শিশুটিকে কিনেছিলেন। তাদের খোঁজ চলছে। টাকাপয়সার লেনদেন হয়েছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আপাতত দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’