দেশে বাল্যবিবাহ সবচেয়ে বেশি কোন রাজ্যে? সাম্প্রতিক জনসংখ্যার উপর করা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংশ্লিষ্ট দফতরের নমুনা সমীক্ষার ফল কী বলছে? দেখে নেওয়া যাক এক নজরে।
তুকতাক-মৃত্যুর ঘটনার জন্য কুখ্যাত ঝাড়খণ্ড। সেই রাজ্যই এ বার উঠে এল সবচেয়ে বেশি বাল্যবিবাহ নিয়ে তৈরি কেন্দ্রীয় তালিকার একেবারে উপরে। ঝাড়খণ্ডে দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাল্যবিবাহের ঘটনা ঘটে বলে জানাচ্ছে অমিত শাহের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সমীক্ষা।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রেজিস্ট্রার জেনারেল অ্যান্ড সেনসাস কমিশনারের করা সমীক্ষা অনুযায়ী, ঝাড়খণ্ডে ৫.৮ শতাংশ মেয়েদের বিয়ে হয়ে যায় বাল্যকালেই। যা গোটা দেশে সবচেয়ে বেশি।
সমীক্ষাটি বলছে, ভারতে ১.৯ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়ে যায় ১৮ বছরে পৌঁছনোর আগেই। এ ব্যাপারে সবচেয়ে ভাল অবস্থা দক্ষিণের রাজ্য কেরলের। সেখানে এক জন মেয়েরও ১৮ পেরোনোর আগে বিয়ে হয় না। এই তালিকার সবার উপরে ঝাড়খণ্ড। সেখানে প্রতি ১০০ মেয়ের মধ্যে ৫.৮ জনের বিয়ে হয় ১৮-য় পৌঁছনোর আগে।
ঝাড়খণ্ডের গ্রামীণ এলাকায় ১৮ বছর পেরোনোর আগে বিয়ে হয় ৭.৩ শতাংশের। অন্য দিকে, শহুরে এলাকায় এই হার ৩ শতাংশ। এমনই দাবি করা হয়েছে সমীক্ষা রিপোর্টে।
এই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, গোটা দেশের মধ্যে ঝাড়খণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গ এমন দু’টি রাজ্য, যেখানে অর্ধেকের বেশি মহিলার বিয়ে হয়ে যায় ২১ বছর বয়সে পৌঁছনোর আগে।
সমীক্ষায় বলা হয়েছে, বাংলায় ৫৪.৯ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়ে যায় ২১ বছরে পা দেওয়ার আগে। ঝাড়খণ্ডে এই হার ৫৪.৬ শতাংশ। যেখানে জাতীয় গড় ২৯.৫ শতাংশ।
প্রতিটি রাজ্যেই সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্র বিভিন্ন পরিকল্পনার মধ্যে দিয়ে বাল্যবিবাহ রোধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাতেও কিশোরীদের জন্য একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রের দাবি, তবুও আটকানো যাচ্ছে না মেয়েদের কম বয়সে বিয়ে দিয়ে দেওয়ার ঘটনা।
২০২০ থেকে সমীক্ষাটি শুরু হয়েছিল। সেপ্টেম্বর মাসের শেষ নাগাদ এই রিপোর্টটি চূড়ান্ত আকারে প্রকাশিত হয়।
‘ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো’ বা এনসিআরবি-র রিপোর্ট বলছে, ঝাড়খণ্ডে ২০১৫-য় ৩২ জনকে তুকতাক করে খুন করার ঘটনা ঘটেছিল। তার পরের বছর, ২০১৬-তে ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ২০১৯ এবং ২০২০-তে ১৫ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
সম্প্রতি ঝাড়খণ্ডে এক নাবালিকাকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরে ফেলার ঘটনা ঘটে। গত ২৩ অগস্ট এক ব্যক্তি ঘুমন্ত নাবালিকার গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন। চার দিন পর হাসপাতালে মৃত্যু হয় নাবালিকার। অভিযুক্ত-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গত ২ সেপ্টেম্বর, ঝাড়খণ্ডের দুমকায় এক ১৪ বছরের আদিবাসী নাবালিকাকে যৌন নির্যাতন করে ফাঁস দিয়ে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। নাবালিকার মায়ের অভিযোগ, মেয়েকে ধর্ষণ করে তার পর খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।