Jagadhatri Puja 2024

চন্দননগরে কড়া নিরাপত্তায় নগর পরিক্রমায় ৬৯ প্রতিমা, নির্দেশ মেনে পুড়ল না বাজি, বাজল না ডিজে

পুজো শুরু আগেই প্রতিমা নিরঞ্জনের পরিকল্পনা শেষ করেছিল কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি। শোভাযাত্রায় শৃঙ্খলারক্ষা করতে কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছিল। সেই মতো শোভাযাত্রায় ডিজে ও যে কোনও বাজি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

চন্দননগর শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৪ ২২:৩৩
Share:

প্রতিবারের মতো এ বারও নজর কেড়েছে প্রয়াত বাবু পালের তৈরি আলোকসজ্জা। —নিজস্ব চিত্র।

রাস্তা জুড়ে ঝলমলে আলো। সঙ্গে বাজছে ঢাকঢোল-সানাই। সোমবার চন্দননগরে এ ভাবেই কার্নিভালে যোগ দিল ৬৯টি পুজো কমিটির প্রতিমা। পর পর ২৪৫টি লরি প্রতিমা নিয়ে ঘুরছে শহর। তার জন্য সারা শহরে মোতায়েন রইল কড়া নিরাপত্তা। মঙ্গলবার সকাল থেকেই নিরঞ্জন হবে প্রতিমার।

Advertisement

প্রতি বছরের মতো সোমবার চন্দননগরের স্ট্র্যান্ড রোড থেকে শুরু হল শোভাযাত্রা। এর পর উর্দি বাজার, গঞ্জের বাজার, সরিষা পাড়া, পঞ্চাননতলা, তালডাঙা, পালপালা রোড, বিদ্যালঙ্কার, বাগবাজার হয়ে জিটি রোডে উঠে রথের সড়ক হয়ে শোভাযাত্রা ঘুরে যাবে জ্যোতির মোড়ে। সেখান থেকে হাটখোলা হয়ে শেষে স্ট্যান্ডে পৌঁছবে প্রতিমা।

প্রতি বছরের মতো সোমবার চন্দননগরের স্ট্র্যান্ড রোড থেকে শুরু হল শোভাযাত্রা। —নিজস্ব চিত্র।

পুজো শুরু আগেই প্রতিমা নিরঞ্জনের পরিকল্পনা শেষ করেছিল কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি। শোভাযাত্রায় শৃঙ্খলারক্ষা করতে কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছিল। সেই মতো শোভাযাত্রায় ডিজে ও যে কোনও বাজি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়। দু’টি কমিটির ট্রাকের মধ্যে সর্বাধিক দূরত্ব ৩০ ফুট এবং প্রতিটি পুজো কমিটির দু’টি ট্রাকের মধ্যে সর্বাধিক দূরত্ব ২০ ফুট বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ট্রাকে বিচিত্রানুষ্ঠানও বন্ধ করা হয়েছে। ট্রাকে আলোকসজ্জার কাঠামোর উচ্চতা ২৮ ফুটের বেশি হবে না বলে জানিয়েছে কমিটি। সেই নিয়ম মেনে সোমবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ শুরু হয় কার্নিভাল। কেন্দ্রীয় কমিটির আওতায় এ বার মোট পুজোর সংখ্যা ১৭৭। এর মধ্যে চন্দননগর থানা এলাকায় ১৪৪ এবং ভদ্রেশ্বরে রয়েছে ৩৩টি পুজো। পুরসভার ভিত্তিতে চন্দননগরে ১৪২, ভদ্রেশ্বরে ২৪ এবং চাঁপদানিতে ১১টি পুজো। বিশেষ জয়ন্তী বর্ষ উদ্‌যাপন করবে ৮টি পুজো কমিটি।

Advertisement

প্রতিবারের মতো এ বারও নজর কেড়েছে প্রয়াত বাবু পালের তৈরি আলোকসজ্জা। দুর্গাপুজোর আগেই মারা গিয়েছেন তিনি। তাঁর অসমাপ্ত কাজ শেষ করেছেন তাঁর কন্যা। সোমবার কার্নিভালে বাবার তৈরি শেষ কাজ দেখে তাই চোখে জল চলে মেয়ে সুশ্বেতা পালের।

রীতি অনুযায়ী, দশমীর সন্ধ্যায় শুরু হয় নিরঞ্জনের শোভাযাত্রা। সেই শোভাযাত্রায় যে সব প্রতিমা অংশ নেয় না, তাদের দশমীর সকালে নিরঞ্জন করা হয়। মণ্ডপে মণ্ডপে প্রতিমা বরণের পর চলে সিঁদুর খেলা। তার পর বাজনা সহকারে গঙ্গার ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয় প্রতিমা। চন্দননগর রেল স্টেশনের পশ্চিম দিকে বেশ কয়েকটি জগদ্ধাত্রী পুজো হয়। রেল স্টেশনের পূর্ব দিকে গঙ্গা হওয়ায় পশ্চিম দিকের ওই প্রতিমাগুলিকে বিসর্জন দিতে সমস্যায় পড়তে হয়। কারণ প্রতিমার আকৃতি বিরাট হওয়ায় চন্দননগর স্টেশনের সাবওয়ে দিয়ে তা নিয়ে যাওয়া যায় না। এ বার ৪২ বছরে পা দিল চন্দননগরের সুভাষপল্লি উত্তরপাড়ার পুজো। সোমবার সকালে ওই বারোয়ারি পুজো কমিটির সদস্যেরা বাঁশের খাঁচায় দড়ি বেঁধে প্রতিমা কাঁধে তুলে রেললাইন ধরে বেশ খানিকটা হেঁটে যান। এর পর রেললাইন পেরিয়ে পূর্ব পাড়ে নিয়ে গিয়ে তা তোলা হয় লরিতে। এই সময়ে হাওড়া-বর্ধমান মেন শাখা ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। রেললাইন পার করে জগদ্ধাত্রী প্রতিমা নিয়ে যাওয়া দেখতে ভিড় জমে যায় চন্দননগর স্টেশনে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement