হুগলির ইমামবাড়া। নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য সংরক্ষণের প্রয়োজন তিনি অনুধাবন করেছিলেন। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেই পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ কমিশন বিধি কার্যকর পাশ হয়। ঐতিহাসিক গুরুত্বের বিচারে শুরুতেই ইমামবাড়া হেরিটেজ স্বীকৃতি লাভ করে। বুদ্ধবাবুর জন্যই ২০০৬ সালে প্রথমবারের জন্য কমিশনের টাকায় ইমামবাড়া সংস্কারের কাজ হয়।
ওই সংস্কার কাজের সূচনায় ইমামবাড়ায় এসেছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা সৈয়দ ইসলাম হোসেন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই টিভির পর্দায় চোখ ছিল তাঁর। ইসলাম বলেন, ‘‘টাকার অভাবে যখন ইমামবাড়ার বিভিন্ন অংশ ক্রমশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, ঠিক তখনই হেরিটেজ কমিশন থেকে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য টাকা এল। পুরোটাই বুদ্ধবাবুর জন্য।’’ আর এক বাসিন্দা সৌমিত্র সিংহ বলেন, ‘‘বুদ্ধবাবুকে ইমামবাড়াতেই কাছ থেকে দেখি। ইমামবাড়া-সহ অনেক স্থাপত্যই ওঁর (বুদ্ধদেব) জন্য আজ সংরক্ষিত।’’ স্থানীয় বাসিন্দা সৈয়দ মহম্মদ আজম স্মৃতিতে ডুব দেন, ‘‘যতদূর সম্ভব ওই টাকায় ইমামবাড়ার পশ্চিম প্রান্তের ছাদের সংস্কার শুরু হয়। কড়ি-বরগা পাল্টানো হয়েছিল।"
১৮৪১ সালে দানবীর হাজি মহম্মদ মহসিন ইমামবাড়া তৈরির কাজ শুরু করেন। শেষ হয় ১৮৬১ সালে। মূলত পাথর ও ইটের সমন্বয়ে চুন, বালি ও চিটে গুড় দিয়ে তৈরি এই স্থাপত্য সংরক্ষণের দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। তবে, অর্থাভাবে সম্ভব হচ্ছিল না। হেরিটেজের স্বীকৃতি না থাকায় সরাসরি সরকারি অনুদানও মিলছিল না।
বুদ্ধদেবের আমলে পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ কমিশন বিধি (২০০১) বলবৎ হওয়ার পরে নানা মাপকাঠিতে রাজ্যের জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্যগুলি চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়। কমিশনের সদস্যদের বিচারেই হেরিটেজ স্বীকৃতি লাভ করে ইমামবাড়া। প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রথম দফায় ৯০ লক্ষ টাকা এসেছিল। তার পর থেকে দফায় দফায় সেই টাকা এখনও আসছে।