ফাইল চিত্র।
হাওড়া শহর এলাকার একাধিক তৃণমূল নেতাকে প্রকাশ্যে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে দেখা গিয়েছে ইতিমধ্যে। তাঁদের গায়ে লেগে গিয়েছে ‘বেসুরো’ তকমা। এতদিন গ্রামীণ এলাকায় তেমন ক্ষোভের কথা শোনা যাচ্ছিল না। এ বার মুখ খুললেন উলুবেড়িয়া পূর্ব কেন্দ্রের বিধায়ক ইদ্রিশ আলি।
বুধবার তাঁর বিধানসভা এলাকায় আয়োজিত একটি সরকারি অনুষ্ঠানে বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধি আমন্ত্রিত হলেও ডাক পাননি ইদ্রিশ। এই কারণে তিনি ক্ষোভ উগরে দেন প্রশাসন এবং দলের একটি অংশের বিরুদ্ধে। এ কথাও জানিয়ে দেন, ‘‘এই ভাবে চললে দলের বড় ক্ষতি এড়ানো যাবে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের দলনেত্রী। তিনি আন্তরিক ভাবেই দল এবং প্রশাসন চালানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু নিচুতলার এই যে সব খুঁটিনাটি ঘটনা, তার সব খবর দলনেত্রীর পক্ষে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। অথচ এর ফলে দলের বড়সড় ক্ষতি হচ্ছে।’’
এ দিন উলুবেড়িয়া-১ ব্লক প্রশাসন চত্বরে পঞ্চায়েতের নির্বাচিত সদস্য ও পদাধিকারীদের জন্য একটি প্রশিক্ষণকেন্দ্র চালু হয়। উদ্বোধন করেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানের মঞ্চে ছিলেন ইদ্রিশের পাশের কেন্দ্র উলুবেড়িয়া দক্ষিণের বিধায়ক পুলক রায়, জেলা পরিষদের সভাধিপতি কবেরী দাস, সহ-সভাধিপতি অজয় ভট্টাচার্য, পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সীতানাথ ঘোষ, জেলা পরিষদের সদস্য সুষমা পারভিন, উলুবেড়িয়া পুরসভার প্রশাসক অভয় দাস-সহ অনেক জনপ্রতিনিধি। কিন্তু দেখা যায়নি ইদ্রিশকে।
ইদ্রিশের খেদ, ‘‘আমাকে অনুষ্ঠানে থাকার কথা কেউ জানাননি। খুব দুঃখ পেয়েছি। ১৯৭৬ সাল থেকে যাঁকে নেতা বলে মানি, সেই সুব্রত মুখোপাধ্যায় আমি যেখানে থাকি তার পাশেই একটি অনুষ্ঠানে হাজির হলেন। অথচ, তাঁর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেলাম না।’’
কেন আমন্ত্রণ জানানো হল না ইদ্রিশকে?
জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি অজয় ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘আমন্ত্রণের তালিকা তৈরি করেছে রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর। এ বিষয়ে আমাদের কিছু জানা নেই।’’ উলুবেড়িয়া দক্ষিণের বিধায়ক পুলকবাবু গ্রামীণ জেলা তৃণমূলের সভাপতিও। তিনি বলেন, ‘‘প্রথম থেকেই আমি এই প্রশিক্ষণকেন্দ্র খুলতে উদ্যোগী হয়েছিলাম। যে ব্লকে অনুষ্ঠানটি হয়েছে, সেটি উলুবড়িয়া পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রে হলেও আমার বিধানসভা কেন্দ্রের বেশ কিছু পঞ্চায়েত রয়েছে। আমার হাজির থাকাটা স্রেফ অতিথি হিসাবে ছিল না। পুরো অনুষ্ঠানটির তত্বাবধান করতে হয়েছে। এখানে জেলার আর কোনও বিধায়ককে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। ফলে, কারও ক্ষোভ প্রকাশের অবকাশ নেই।’’
মন্ত্রী সুব্রতবাবু অবশ্য জানিয়েছেন, ইদ্রিশকে কেন আমন্ত্রণ জানানো হল না সে বিষয়ে তিনি দফতরে খোঁজ নেব। তাঁর কথায়, ‘‘মনে হয় কোথাও একটা ভুল হয়েছে।’’