পরিকাঠামো এবং পরিষেবার সীমাবদ্ধতা নিয়েই বিভিন্ন ইএসআই হাসপাতাল চলে আসছে। তবে, হুগলির শ্রীরামপুর ইএসআই হাসপাতালে পরিষেবার গণ্ডি কিছুটা বাড়ল। সঙ্কটাপন্ন বা গুরুতর অসুস্থদের জন্য বুধবার ১০ শয্যার আইসিইউ (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট), ১৬ শয্যার এইচডিইউ (হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিট) এবং আধুনিক অপারেশন থিয়েটার চালু হল। এটি হাসপাতালের দ্বিতীয় অপারেশন থিয়েটার।
বুধবার দুপুরে এই সব পরিষেবার উদ্বোধন করলেন শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। ছিলেন শ্রীরামপুরের বিধায়ক সুদীপ্ত রায়, চাঁপদানির বিধায়ক অরিন্দম গুঁইন, শ্রীরামপুরের পুরপ্রধান গিরিধারী সাহা, পুর-পারিষদ পিন্টু নাগ প্রমুখ। মন্ত্রীর আশ্বাস, শীঘ্রই ডায়ালিসিস ইউনিট চালুর চেষ্টা করা হবে। হৃদরোগের উন্নত চিকিৎসার জন্য ক্যাথ ল্যাব যন্ত্র বসানোর প্রস্তাব রয়েছে।
মন্ত্রীর কথায়, ‘‘ইএসআইয়ের পরিষেবার নিরিখে কেন্দ্রের পুরস্কার গত দু’বছর বন্ধ। তার আগে পরপর সাত বছর দেশে সেরা ইএসআই পরিষেবা দেওয়ার জন্য আর্থিক পুরস্কার আমরা পেয়েছি।’’ এ দিন শ্রীরামপুরের হাসপাতালটিতে একটি কনফারেন্স রুম এবং নতুন রূপে ক্যান্টিন উদ্বোধনও করেন শ্রমমন্ত্রী।
এই হাসপাতাল চত্বরে মেডিক্যাল কলেজ তৈরির প্রস্তাব রয়েছে। কয়েক মাস আগে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে সরেজমিনে পরিদর্শন করা হয়। বুধবার মন্ত্রীর কাছে বিষয়টি তোলেন বিধায়ক তথা রাজ্যের হেল্থ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান সুদীপ্ত রায়। মন্ত্রী জানান, বিষয়টি নিয়ে ইএসআইয়ের রিজিয়োনাল বোর্ডের পরবর্তী বৈঠকেই আলোচনা করা হবে। তিনি এই বোর্ডের চেয়ারম্যান।
এ দিন উদ্বোধন হওয়া পরিষেবা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সুদীপ্ত বলেন, ‘‘নতুন এক দিগন্ত চালু হল। তবে আমাদের মুখ্য দাবি, মেডিক্যাল কলেজ। মন্ত্রীকে বলেছি, প্রস্তাব দিয়েছি।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘এখানে মেডিক্যাল কলেজ করা সম্ভব। জায়গা রয়েছে। পরিকাঠামো রয়েছে। একটু চেষ্টা করলেই হবে। মন্ত্রী নিজেও দেখছেন। আসানসোলেও হবে। সেখানেও জায়গা আছে।’’
হাসপাতালের সুপারিন্টেন্ডেন্ট অভ্রজিৎ মুখোপাধ্যায় জানান, এ দিন যে সব প্রকল্পের উদ্বোধন হল, তার জন্য প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। এর মধ্যে আইসিইউ চলবে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে পিপিপি (পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ) মডেলে। আরামবাগ, ধনেখালি-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে রোগী এখানে আসেন। রোগীর আত্মীয়দের রাত্রিবাসের জন্য বিশ্রাম কক্ষ (ওয়েটিং রুম) তৈরি হচ্ছে।
সুপার জানান, মেডিক্যাল কলেজ তৈরির জন্য এখানে ১৬ একর জমি রয়েছে। তিনি মনে করেন, আরও জমি প্রয়োজন হলে ইএসআই এবং অনতিদূরে থাকা শ্রীরামপুর ওয়ালশ মিলিয়ে মেডিক্যাল কলেজ করা যেতে পারে। মেডিক্যাল কলেজ হলে বিস্তীর্ণ এলাকার রোগীকে কলকাতায় যেতে হবে না। ওয়ালশে নার্সিং-এর বিএসসি কোর্স চালু হয়েছে। প্রস্তাবিত মেডিক্যাল কলেজের আলোচনায় অন্যান্য মেডিক্যাল-টেকনোলজি কোর্স চালুর কথাও ওঠে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, চা বাগানের শ্রমিক, বিড়ি শ্রমিকদের ইএসআইয়ের আওতায় আনা হবে। অসংগঠিত নানা ক্ষেত্রের শ্রমিকদের এর আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
হাসপাতালে কর্মরত চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের মজুরি বৃদ্ধির দাবি রয়েছে। এ নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের
দাবি, বিষয়টি সরকারের বিবেচনার মধ্যে রয়েছে।