গ্রাফিক: সনৎ সিংহ
তিন দিনের মধ্যেই চুঁচুড়ার গঙ্গোপাধ্যায় পরিবারের শিবদুর্গার সোনার মূর্তি চুরির রহস্য ভেদ করল পুলিশ। গ্রেফতার করা হল বাড়ির পরিচারিকা-সহ দু’জনকে। গ্রেফতার হওয়া পরিচারিকার নাম আলোবতী দাস। গ্রেফতার করা হয় তাঁর সঙ্গী অন্বয় দাসকেও।
গত রবিবার চুঁচুড়া দাসপাড়ার গঙ্গোপাধ্যায় বাড়ি থেকে চুরি যায় ৮০ বছরের প্রাচীন সোনার শিবদুর্গা মূর্তি। এর পরেই মূর্তি উদ্ধারে উঠেপড়ে লাগে চুঁচুড়া থানার পুলিশ। তদন্তের শুরুতেই পুলিশ বাড়ির পরিচারিকা আলোবতী-কে মূর্তি চুরির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, আলোবতীকে জেরা করার সময় তাঁর কথায় অসঙ্গতি পায় পুলিশ। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে বার বার গঙ্গোপাধ্যায় পরিবারের সদস্যদের দিকেই আঙুল তোলেন তিনি। এর পরেই পুলিশের মনে সন্দেহ দানা বাঁধে।
পুলিশ জানিয়েছে, আলোবতীর বাড়ি দাসপাড়ার বুড়োশিবতলায়। তাঁর মা দীর্ঘ দিন ধরে গঙ্গোপাধ্যায় বাড়িতে কাজ করতেন। সেই সূত্রেই দু’মাস আগে এই বাড়িতে তিনি কাজ শুরু করেন। পুলিশ তাঁর সম্পর্কে খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারে, এর আগেও তাঁর বিরুদ্ধে বেশ কিছু চুরির অভিযোগ রয়েছে। ইদানীং সুদের কারবারও শুরু করেছিলেন। সেই সূত্রেই অন্বয়ের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। অন্বয়ের কাছে বেশ কিছু টাকা ধার নিয়ে তা শোধ করতে না পারায় চাপে পড়েন তিনি। এর পরেই রবিবার গঙ্গোপাধ্যায় বাড়িতে কাজ করতে গিয়ে ঠাকুরঘর থেকে সোনার মূর্তি চুরি করেন আলোবতী। চুরি করা মূর্তির কিছুটা ভেঙে অন্বয়কেও দেন। অন্বয় সেই ভাঙা অংশ একটি সোনার দোকানে বিক্রি করেন। তদন্তকারীরা ইতিমধ্যেই আলোবতীর বাড়ি এবং ওই সোনার দোকান থেকে পুরো সোনাই উদ্ধার করেছে। আলোবতী ও অন্বয়কে তিন দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তবে এই ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হবে বলেও জানিয়েছেন চুঁচুড়া থানার আইসি অনুপম চক্রবর্তী।
ঘটনার মিলের কারণে গঙ্গোপাধ্যায় পরিবারের বিগ্রহ চুরির সঙ্গে সত্যজিৎ রায়ের ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’-এর কাহিনির তুলনা করছিলেন অনেকে। অধরা ‘মগনলাল’ ধরা পড়ারও অপেক্ষা করছিলেন অনেকে। তবে এ বার জোড়া মগনলাল-এর গ্রেফতারে খুশি গঙ্গোপাধ্যায় পরিবার।