মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জগদীপ ধনখড়। ফাইল চিত্র।
তাঁর কাজ এবং জীবনযাপন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোলা অভিযোগ খারিজ করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। পাশাপাশি, বুধবার মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁদের দলের নেতাদের বিরুদ্ধে অসাংবিধানিক আচরণের অভিযোগ তুলেছেন তিনি। অভিযোগ করেছেন, ‘‘বাংলায় আইনের শাসন নয় শাসকের আইন চলছে। এমন ব্যবস্থা গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক।’’ তাঁর বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীর তোলা একটিও অভিযোগ প্রমাণিত হলে রাজ্যপাল পদ থেকে তিনি ইস্তফা দেবেন বলে জানিয়েছেন ধনখড়।
রাজভবনে ফাইল আটকে রাখার অভিযোগ প্রসঙ্গে বুধবার ধনখড়ের মন্তব্য, ‘‘আমার কাছে কোনও ফাইল পড়ে নেই। যদি কোনও ফাইল আটকে থাকে, তার দায় রাজ্যের। কারণ, সেই ফাইলের বিষয়ে প্রশ্ন করেও রাজ্য সরকারের জবাব মেলেনি।’’ সোমবার মুখ্যমন্ত্রী ‘মা ক্যান্টিনের’ খরচ নিয়ে রাজ্যপালের প্রশ্ন তোলার ঘটনায় উষ্মা প্রকাশ করে তাজ বেঙ্গল থেকে রাজভবনে খাবার আনার অভিযোগ করেছিলেন। ধনখড়ের জবাব, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন ,আমি রোজ তাজ বেঙ্গল খাবার নিয়ে আসি, মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য তথ্যগত ভাবে ১০০ শতাংশ অসত্য।’’
তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের নামও এসেছে রাজ্যপালের বক্তৃতায়। সৌগতের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী নাম করে টুইটারে আক্রমণ করতেন রাজ্যপাল। তাই তাঁকে টুইটারে ব্লক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ধনখড়ের দাবি, অন্তত ৯০০ টুইটে তিনি ব্যক্তিগত আক্রমণ করেননি। রাজ্য সরকারের কী করণীয় সে বিষয়ে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে মতামত দিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর তোলা টেলিফোনে আড়িপাতার অভিযোগও নস্যাৎ করেন রাজ্যপাল। এমন মিথ্যা অভিযোগের বিষয়ে ‘গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ’ সংবাদমাধ্যম কেন প্রশ্ন তুলছে না, সে প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। ধনখড়ের দাবি, প্রজাতন্ত্র দিবসে রেড রোডে কুচকাওয়াজ শুরুর আগে মুখ্যমন্ত্রী যে তাঁকে প্রথা মেনে স্বাগত জানাতে এগিয়ে আসেননি, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে রাজ্যপালের মন্তব্য, ‘‘দেশের কোনও রাজ্যে কখনও এমন পরিস্থিতি হয়নি।’’ নাম না করে রাজ্যপালকে ‘ঘোড়ার পাল’ বলে কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মন্তব্য সম্পর্কে ধনখড়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমি স্তম্ভিত।’’