অর্থিক সমস্যায় হুগলী পৌরসভা। — ফাইল চিত্র।
পুজোর আগে রাস্তা সংস্কার নিয়ে আশ্বাস দিয়েছিল হুগলির পুরসভাগুলি। জোড়াতাপ্পি দিয়ে জেলার বহু রাস্তা মেরামতও করা হয়েছিল। কিন্তু পাকাপাকি ভাবে কোনও রাস্তা সারাই বা সংস্কার করা হয়নি। টাকার জোগানের জন্য সেই কাজ থমকে রয়েছে বলে অভিযোগ পুরকর্তাদের।
আর্থিক সঙ্কটের কথা অস্বীকার না করেও এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টিই দফতরের বিভাগীয় কর্তাদের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। জেলাস্তরে যেমন নির্দেশিকা আসে সেই অনুয়ায়ী কাজ করা হয়।’’
উত্তরপাড়ার কোতরং এলাকায় গঙ্গার পাড়ে রাজ্য সরকারের আর্থিক সহায়তায় জল প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে বছর দু’য়েক আগে। গঙ্গার জল পরিশুদ্ধ করে হুগলির ছয়টি পুরসভা এবং লাগোয়া পাঁচটি পঞ্চায়েতে সরবরাহ করা হবে। বলাগড়েও আরও একটি বড় জলপ্রকল্পের কাজ চলছে। সেই কাজের জন্য রাস্তা খুঁড়ে চলছে পাইপ বসানোর কাজ। আবার চুঁচুড়াতে মাটির নীচ দিয়ে বিদ্যুৎবাহী তার নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছে। তার ফলে বহু রাস্তাই এবড়ো-খেবড়ো বেহাল হয়ে রয়েছে।
তার উপর বর্তমানে উত্তরপাড়া, চন্দননগর, চুঁচুড়ার মতো জেলার গুরুত্বপূর্ণ পুরসভাগুলিতে আবার গত কয়েক মাস ধরে ধসের সমস্যা শুরু হয়েছে। টাকার সঙ্কটের কারণে সেগুলিও ঠিক করে সংস্কার করা যাচ্ছে না বলে অনেক পুরকর্তারই অভিযোগ।
পুরসভাগুলি সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর খানেক আগেও রাস্তা সংস্কার বা নির্মাণের ক্ষেত্রে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের কাছে আবেদন করলে দ্রুত সাড়া মিলত। তারপর সেই কাজে কমবেশি তিন মাসের পর টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যেত। কিন্তু বর্তমানে সেই কাজে হাত পড়তে বছর ঘুরে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরগুলিতে তাগাদা দিয়েও বহু ক্ষেত্রে সাড়া মিলছে না।
জেলার এক পুরকর্তা বলেন, ‘‘পানীয় জল বা বর্জ্যের খাতে টাকার জোগানে সমস্যা তেমন নেই। মূল জটিলতা এই রাস্তাঘাট মেরামত করার ক্ষেত্রে। স্থানীয়রা ক্ষোভ জানাচ্ছেন। কিন্তু আমাদের কিছুই করার নেই।’’ অন্য আর এক পুরপ্রধানের কথায়, ‘‘সরকারি বিধি অনুয়ায়ী, আবেদন করলে কোনও ক্ষেত্রেই ‘না’ বলা হয় না। আমরা গুরুত্বের নিরিখে আবেদন করি। সবুজ সঙ্কেত মিললে টেন্ডারের প্রক্রিয়া শুরু করি। কিন্তু এখন অপেক্ষাই সার।’’
যদিও জেলা প্রশাসনের এক কর্তার সাফাই, উত্তরপাড়া পুর এলাকায় রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। অন্যত্র কাজ শুরুর প্রক্রিয়া চলছে।
এখন দেখার, চিত্র আদৌ বদলায় কি না?