dacoity

৩ মাস ধরে সোনার দোকানে লুটের ছক করে ব্যর্থ, কোন কৌশলে ডানকুনির ডাকাত ধরল পুলিশ?

ডাকাতির আগে দুষ্কৃতীরা শোরুমে রেইকি করে। তিন মাস ধরে তাঁরা ডানকুনিতে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকছিলেন। পরিকল্পনা ছিল, ডাকাতি করে দ্রুত এলাকা ছাড়ার। কিন্তু পুলিশের নাকা তল্লাশিতে ভেস্তে যায় সব ছক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ডানকুনি শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৮:৪১
Share:

সোনার দোকানে ডাকাতির সময়ের ছবি। — নিজস্ব চিত্র।

সোনার দোকানে ডাকাতি করার আগে নিয়মিত রেইকি করেছিলেন দুষ্কৃতীরা। তিন মাস ধরে তাঁরা ঘাঁটি গেড়েছিলেন এলাকায়। কিন্তু ডাকাতি করে কেজি কেজি সোনা লুট করে পালানোর পথে পুলিশের তৎপরতায় ধরা পড়ে যান তাঁরা। হুগলির ডানকুনিতে সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনায় ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে উঠে আসছে এমনই সব চাঞ্চল্যকর তথ্য।

Advertisement

ডানকুনির টিএন মুখার্জি রোডে একটি সোনার দোকানে হানা দেয় দুষ্কৃতীরা। কিন্তু ডাকাতির পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে লুট হওয়া অলঙ্কার-সহ ধরা পড়ে যায় চার দুষ্কৃতী। তাদের থেকে উদ্ধার হয় নয় কিলোগ্রাম সোনা এবং হিরের গহনা। দুষ্কৃতীদের থেকে উদ্ধার হয় আগ্নেয়াস্ত্রও। চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার অমিত পি জাভালগি জানিয়েছেন, চার জন ধরা পড়লেও, দুই দুষ্কৃতী এখনও ফেরার। ধৃতদের জেরা করে তাঁদের পরিচয় জানা গিয়েছে। খোঁজ চলছে ফেরারদের। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভদ্রেশ্বর থানার পিএসআই আসানুল হকের তৎপরতায় ধরা পড়ে যায় ওই ডাকাত দলটি। আসানুলকে পুরস্কৃত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চন্দননগর পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্রেতা সেজে ডানকুনির শোরুমে ঢুকেছিলেন ডাকাত দলের চার সদস্য। বাইরে পাহারায় ছিলেন দু’জন। বাইরে থাকা দুই দুষ্কৃতী শোরুমের নিরাপত্তারক্ষীকে আটকে রাখেন আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে। এর পর ক্রেতা সেজে থাকা ডাকাতরা ধারণ করেন নিজ মূর্তি। তাঁরা আগ্নেয়াস্ত্র বার করে চালান লুটপাট। ব্যাগে সোনা এবং হিরের গয়না ভরে নিয়ে তাঁরা চম্পট দেন। ঘটনার তদন্তে নেমে প্রথমে খতিয়ে দেখা হয় শোরুমের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ। পুলিশ নিশ্চিত হয়, দু’টি বাইকে এসেছিল মোট ছয় দুষ্কৃতী। ঘটনার তদন্তে নামে সিআইডি। পাশাপাশি, সতর্ক করে দেওয়া হয় হুগলির সব থানা এবং পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিকেও। নাকা তল্লাশি শুরু হয় জেলা জুড়ে। সেই খবর পায় গোঘাট থানাও। হুগলি-বাঁকুড়া সীমানায় একটি বাঁকুড়াগামী বাসকে থামান আসানুল। এর পর খাটুল এলাকার ব্যবসায়ীদের সাহায্যে চার জন ধরা পড়ে যান। ধৃতদের ব্যাগে পাওয়া যায় সোনা এবং হিরের অলঙ্কার। পাওয়া যায় আগ্নেয়াস্ত্রও।

Advertisement

জাভালগি জানিয়েছেন, ভদ্রেশ্বর থানার সাব ইনস্পেক্টর আসানুল হক। তিনি সেই সময় আরামবাগে ছিলেন। ডানকুনিতে সোনার দোকানে ডাকাতির খবর পান তিনিও। তিনিও জানতে পারেন, দুষ্কৃতীরা কী রকম পোশাক পরে আছে। দুষ্কৃতীদের হাতে ব্যাগ রয়েছে বলেও জানতে পারেন তিনি। আসানুলের সন্দেহ হয়, চার জনকে একটি বাসে উঠতে দেখে। চুপিসারে তাঁদের পিছু নেন আসানুল। গোঘাটে নাকা তল্লাশি চলছে জানতে পেরে পুলিশের সাহায্য চান তিনি। খাটুল বাজারে বাস পৌঁছতেই বাস থেকে নেমে চেঁচামেচি করেন আসানুল। এর পর ব্যবসায়ীরা জড়ো হয়ে সকলে মিলে ডাকাতদের ধরেন। সেই দলে ছিলেন কয়েক জন পুলিশকর্মী এবং সিভিক ভলান্টিয়ারও।

জাভালগি আরও জানিয়েছেন, জেরায় জানা গিয়েছে, ডাকাতির আগে দুষ্কৃতীরা শোরুমে রেইকি করে। এলাকা চেনার জন্য তিন মাস ধরে তাঁরা ডানকুনিতে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকছিলেন। তাঁদের পরিকল্পনা ছিল ডাকাতি করে দ্রুত এলাকা ছাড়ার। সেই মতো কাজও হয়েছিল। কিন্তু পুলিশের নাকা তল্লাশিতে ভেস্তে যায় সব ছক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement