হাওড়ায় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। —নিজস্ব চিত্র।
আচমকাই হাওড়ার একটি বেসরকারি স্কুলে হাজির রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। শনিবার সকালে গঙ্গা পেরিয়ে টোটোয় চেপে একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে যান তিনি। হাওড়া প্রশাসন সূ্ত্রে খবর, রাজ্যপালের সফর নিয়ে তাদের কাছে আগাম কোনও খবরই ছিল না।
পুলিশ-প্রশাসনকে আগাম খবর না দিয়ে সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে রাজ্যপাল চলে আসেন মধ্য হাওড়ার বনবিহারী বসু রোডের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে। স্থানীয় সূত্রে খবর, লঞ্চে চেপে প্রথমে রামকৃষ্ণপুর ঘাটে আসেন তিনি। সেখান থেকে টোটো চেপে পৌনে ১০টা নাগাদ স্কুলের গেটে পৌঁছে যান। স্কুলে ঢুকেই নোটিস বোর্ড দেখতে থাকেন প্রথমে। সেখানে পড়ুয়াদের শিল্পকর্ম দেখেন। প্রধানশিক্ষিকা মৌসুমী ঘোষাল এবং অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকা ওই সময় ক্লাস নিচ্ছিলেন। খবর পেয়ে প্রধানশিক্ষিকা দ্রুত চলে আসেন রাজ্যপালকে স্বাগত জানাতে। তার পর রাজ্যপালকে স্কুল ঘুরিয়ে দেখান। বিভিন্ন ক্লাসে গিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গেও কথা বলেন রাজ্যপাল।
তবে রাজ্যপালের আচমকা এই সফরে বিস্মিত সকলেই। স্কুলে চা পান করে রাজ্যপাল চলে যাওয়ার পর প্রধানশিক্ষিকা মৌসুমী ঘোষাল বলেন, ‘‘প্রথমে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে, রাজ্যপাল স্কুলে এসেছেন। স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছিল। আগে থেকে আমাদের কাছে কোনও খবরই ছিল না। তিনি আসার পর ক্লাসরুম ঘুরে দেখেন। কী ভাবে ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস করছে এবং শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাদের পড়াচ্ছেন, তিনি তার খোঁজখবর নেন।’’
অন্য দিকে, রাজ্যপাল জানান, তাঁর আসার উদ্দেশ্য একটাই— বাংলাকে নতুন ভাবে চেনা। যাওয়ার সময় স্কুলের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘‘থ্রি চিয়ার্স টু টিচার্স, থ্রি চিয়ার্স টু স্টুডেন্টস্।’’
তবে রাজ্যপাল জানান, স্কুলে মেয়েদের নিজেদের নিরাপত্তার জন্য মার্শাল আর্টের প্রশিক্ষণ খুবই জরুরি। এ বিষয়ে জোর দিতে বলেন তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘‘বাংলাকে চেনার জন্য স্কুলে এসেছি। এখানে এসে খুবই ভাল লেগেছে। বাংলার ছাত্রছাত্রীরা দেশ তথা পৃথিবীর সেরা। এরাই দেশের ভবিষ্যৎ নাগরিক।’’ রাজ্যপালের সংযোজন, ‘‘বলা হয়ে থাকে, পড়ুয়ারা যদি কিছু না শেখে তবে শিক্ষকেরা কিছু শেখাননি। এখানে ছাত্রছাত্রীরা শিখছে মানে শিক্ষকেরা শেখাচ্ছেন।’’ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের রাজভবনে যাওয়ারও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন রাজ্যপাল।