খানাকুলের রঘুনাথপুরে থেকে হেঁটে দিল্লি যাওয়ার পথে গোলাপ সুন্দরী।
শিশু নিগ্রহ এবং বাল্যবিবাহ রোধে সচেতনতা বাড়াতে নারী সেজে বছর চারেক ধরে রাজ্যের জেলায় প্রচার চালাচ্ছেন। এ বার একই উদ্দেশ্যে হেঁটে দিল্লি পাড়ি দিলেন খানাকুলের মাঝপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেবাশিস মুখোপাধ্যায় তথা ‘গোলাপসুন্দরী’। নিজের ফর্সা রঙের কথা মাথায় রেখে নিজেই এই নামকরণ করেছেন িতনি।
রবিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ বছর চুয়ান্নর দেবাশিস, ‘গোলাপসুন্দরী’ বেশে নারীমুক্তি আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ রাজা রামমোহনের বসতবাটী খানাকুলের রঘুনাথপুর থেকে যাত্রা শুরু করেন। তাঁর অনুমান, খানাকুল থেকে দিল্লি প্রায় ১৫০০ কিলোমিটারের পথ হেঁটে যেতে সময় লাগবে ৪০ দিন। সে কারণে অভিযানের নাম দিয়েছেন, ‘মিশন ৪০’।
ফাঁকা রাস্তায় হাঁটার সময় পরচুলা এবং ঘাগরা খুলে রাখছেন দেবাশিস। লোকালয়ে ঢোকার আগে ফের গোলাপসুন্দরীর বেশ। দীর্ঘ পদযাত্রায় নিজের বয়স এবং শীতের দাপট নিয়ে তাঁর হেলদোল নেই। বলেন, “বাল্যবিবাহ এবং শিশু নিগ্রহ দেশের ব্যাধি। সেটা নিয়ে সচেতনতা প্রচার তো যুদ্ধের মতোই। নিজেকে সৈনিক মনে হচ্ছে। এখানে বয়স বা ঠান্ডা কোনও বাধা নয়।”
প্রথম দিনের যাত্রাশেষে দেবাশিস গোঘাটের মদিনায় রাত কাটালেন। আরামবাগ, গোঘাট হয়ে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়খণ্ড, বিহার এবং উত্তরপ্রদেশ হয়ে তাঁর দিল্লি পৌছনোর কথা। দিল্লিতে তিন দিন প্রচারের পাশাপাশি রামমোহনের জন্মভূমি পর্যন্ত রেলপথের দাবিতেওতিনি সরব হবেন বলে জানান। ফেরার পথে অবশ্য ট্রেনে ফিরবেন। এই অভিযানের জন্য বিদ্যালয় থেকে ৪৫ দিন ছুটি নিয়েছেন দেবাশিস। তাঁর কথায়, ‘‘গত ২৩ বছর চাকরি জীবনে কোনও দিন ছুটি নিইনি। সেই সব পাওনা ছুটি নিয়েছি। বাকি তিন সহকর্মী স্কুল সামলাবেন, কোনও অসুবিধা হবে না।”