Duare Sarkar Campaign

বিজেপির পঞ্চায়েতে দুয়ারে সরকার শিবিরে সাড়া ভালই

এর সঙ্গেই বিজেপির পঞ্চায়েত প্রধানেরা বলছেন, দীর্ঘসূত্রিতা কাটিয়ে মানুষকে যথাযথ পরিষেবা দেওয়া না হলে পরবর্তী সময়ে এই কর্মসূচি বয়কট করা হবে।

Advertisement

পীযূষ নন্দী

খানাকুল শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:৫২
Share:

বিজেপি পরিচালিত রাজহাটি-১ পঞ্চায়েত এলাকায় ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি। —নিজস্ব চিত্র।

হুগলির ১৮টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে শুধুমাত্র খানাকুল-২ বিরোধীদের দখলে। ক্ষমতায় বিজেপি। এই ব্লকের ১১টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৮টিও গেরুয়া শিবিরের হাতে। ফলে এখানে দুয়ারে সরকার শিবির কেমন হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা ছিল। হিসাব বলছে, ৮টি পঞ্চায়েতেই এই কর্মসূচি সাড়া ফেলেছে। তৃণমূল পরিচালিত ৩টি পঞ্চায়েতের তুলনায় এই সব জায়গায় প্রচার বেশি ছিল বলে এলাকাবাসীর একাংশের দাবি। ১ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিবির হয়েছে। এখন চলছে আবেদনের প্রেক্ষিতে পরিষেবা দেওয়ার পালা।

Advertisement

দুয়ারে সরকার নিয়ে প্রায়ই কটাক্ষ করেন বিজেপি নেতৃত্ব। তা হলে, রাজ্য সরকারের এই কর্মসূচি নিয়ে কেন এত প্রচার?

বিজেপি পরিচালিত ধান্যগোড়ি পঞ্চায়েতের প্রধান কার্তিক ঘোড়ার মতে, সরকারি কর্মসূচিকে শাসকদল তাদের প্রচারের হাতিয়ার করে রেখেছে। এই নিয়ে সাত দফা দুয়ারে সরকার হলেও বিভিন্ন ভাতা-সহ সরকারি প্রকল্পের অধিকাংশ সুযোগ-সুবিধা উপযুক্তদের বঞ্চিত করে দলীয় অনুগতদের দেওয়া হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘বঞ্চিতদের সুযোগ করে দিতেই আমরা সর্বস্তরের মানুষের কাছে প্রচার চালিয়েছি। মানুষ ভাল সাড়া দিয়েছেন।’’

Advertisement

এর সঙ্গেই বিজেপির পঞ্চায়েত প্রধানেরা বলছেন, দীর্ঘসূত্রিতা কাটিয়ে মানুষকে যথাযথ পরিষেবা দেওয়া না হলে পরবর্তী সময়ে এই কর্মসূচি বয়কট করা হবে। জগৎপুরের উপপ্রধান সঞ্জিত মণ্ডলের প্রশ্ন, এত বার দুয়ারে সরকার হলেও ৭০ থেকে ৯২ বছর বয়সি মানুষ বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতা পেলেন না কেন? তিনি বলেন, ‘‘সরকারি কর্মসূচিকে তৃণমূল দলীয় প্রচারের হাতিয়ার করার কৌশল বজায় রাখলে পরের বার থেকে নিজস্ব তহবিল খরচ করে ওই মোচ্ছবে অংশগ্রহণ করব না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।’’ একই কথা জানিয়ে রাজহাটি-২ পঞ্চায়েতের প্রধান চিত্তরঞ্জন মাকাল, চিংড়ার প্রধান সুষমা সাঁতরা, পলাশপাই ১-এর প্রধান বিকাশ বাউরিদের দাবি, আগের বিভিন্ন দুয়ারে সরকারে নথি ঘেঁটে দেখা গিয়েছে, বিভিন্ন প্রকল্পে আবেদনের ১০-২০ শতাংশ অনুমোদন করে বাকি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষের বক্তব্য, ‘‘সরকারি প্রকল্প যথাযথ ভাবে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে আমাদের সদস্যেরা কাজ করছেন।’’

বিজেপির অভিযোগ মানেননি ব্লক তৃণমূল সভাপতি অনুপ মাইতি। এ বারের দুয়ারে সরকার শিবির নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘‘কয়েক জায়গায় শিবিরের বাইরে বিজেপির দলীয় ব্যানার লাগানো হয়েছে। এ ছাড়া সার্বিক ভাবে কর্মসূচি সফল। ভাল মাইক প্রচার করেছে পঞ্চায়েতগুলি। বিভিন্ন পঞ্চায়েতে আমাদের কর্মীরা মানুষকে আবেদনের ফর্ম ভর্তিতে সহযোগিতা করেছেন। কোথাও অশান্তির বাতাবরণ ছিল না।’’ মাড়োখানা পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য তথা প্রাক্তন উপপ্রধান শেখ আব্বাস বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাদের ৬ সদস্য একটি আলাদা টেবিলে ছিলাম। কোনও সমস্যা হয়নি।’’

বিডিও শঙ্খ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বিভিন্ন পঞ্চায়েত এবং ভ্রাম্যামাণ মিলিয়ে ১৬ দিনে ১৭৫টি শিবির হয়েছে। কোথাও সমস্যা হয়নি। ভাল সাড়া মিলেছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের নিবন্ধীকরণের সময়সীমা ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সব মিলিয়ে আবেদন জমা পড়েছে ১৩ হাজার ৪৩২টি। তার মধ্যে বার্ধক্য ভাতা ৫৭১০টি, পরিযায়ী শ্রমিক নিবন্ধীকরণ ১১৩৮টি, বিধবা ভাতা ৪৪০টি, লক্ষ্মী ভান্ডার ২৩৮৮, স্বাস্থ্যসাথী ১৬৯০, খাদ্যসাথী ২৩৫টি, কৃষক বন্ধু ১০২৩টি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement