পুরসভার গেটে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।
বকেয়া মজুরির দাবিতে রবিবার থেকে কর্মবিরতি শুরু করেছেন হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার অস্থায়ী কর্মীদের একাংশ ও শ্রমিকেরা। দু’দিনেই শহর জুড়ে জঞ্জাল জমেছে। মহিলা থানার উল্টো দিক, আখনবাজার, খাদ্য ভবনের কাছে তো বটেই, এ ছাড়াও শহরের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা ডাস্টবিনগুলি উপচে পড়তে শুরু করেছে। ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। অনেকে ওই সব এলাকা পেরোচ্ছেন নাকে রুমাল চাপা দিয়ে। এ ভাবে চলতে থাকলে শীতের মরশুমে রোগব্যাধি ছড়ানোর আশঙ্কা করছেন শহরবাসী।
মহকুমাশাসক (সদর) স্মিতা সান্যাল শুক্ল বলেন, ‘‘অনেক অনুরোধের পর পুরসভার অস্থায়ী কর্মীরা জল ও আলো পরিষেবা দিতে রাজি হলেও সাফাইয়ে নারাজ। সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে। পুর আধিকারিকদের কাছ থেকে পুরসভার আয়-ব্যয় সংক্রান্ত নথি নেওয়া হয়েছে। রিপোর্ট তৈরি করে জেলাশাসকের কাছে পাঠাব।’’ আন্দোলনকারীদের পক্ষে অসীম অধিকারী বলেন, ‘‘দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। তাই অস্থায়ী শ্রমিক-কর্মীরা সর্বসম্মত ভাবে এই আন্দোলনে শামিল হয়েছেন।’’
পরিস্থিতি নিয়ে পুরপ্রধান অমিত রায়ের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে, পুর-পারিষদ (স্বাস্থ্য) জয়দেব অধিকারী বলেন, ‘‘সব কাজ আমার দ্বারা সম্ভব নয়। স্থায়ী কিছু কর্মী কাজ করেছেন। মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। আন্দোলনকে সমর্থন করেই বলছি, পরিষেবা বন্ধ রাখলে পুরসভার আয় আটকে যাবে। সে ক্ষেত্রে মজুরি মেলাই অসম্ভব হয়ে পড়বে। এটা আন্দোলনকারীদের বোঝা উচিত।’’
পূর্ব ঘোষণা মতো সোমবার সকাল থেকেই মজুরির দাবিতে পুরসভার গেটে বিক্ষোভে শামিল হন অস্থায়ী কর্মী-শ্রমিকেরা। অন্যদিকে, পরিস্থিতি মোকাবিলায় আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন মহকুমাশাসক। আধিকারিকেরা বৈঠকে থাকায় এবং বিক্ষোভে পুরভবনের অন্দরের অস্থায়ী কর্মীদের একাংশ শামিল হওয়ায় বহু মানুষই পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হন। পুরপ্রধান-সহ অনেক কাউন্সিলরেরই এ দিন দেখা মেলেনি।
সূত্রের খবর, পুরসভার মাসিক লোকসান প্রায় দেড় কোটি টাকা। এক পুরকর্তার দাবি, এ হেন পরিস্থিতিতে বিশেষ কিছু পদক্ষেপ ছাড়া পুরসভাকে বাঁচানো সম্ভব নয়। প্রায় ১৬০০ অস্থায়ী কর্মী-শ্রমিককে ২৭০ টাকা রোজ মজুরি দিতে হয়। অথচ, সেই কর্মীদের অনেকেই কাজ করেন না, এমন অভিযোগ রয়েছে। আরও অভিযোগ, কাজ না করা কর্মীদের চিহ্নিত করার ক্ষেত্রেও সে ভাবে উদ্যোগী হন না কর্তৃপক্ষ। পুর কর্তৃপক্ষ এ অভিযোগ মানেননি।