দোষী সাব্যস্ত হওয়া সেই বাবা। —নিজস্ব চিত্র।
ছ’বছরের ছেলের সামনেই মাকে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করেছিলেন বাবা! ঘটনার ন’বছর পর চুঁচুড়া আদালতে বাবা দোষী সাব্যস্ত হলেন সেই ছেলের সাক্ষ্যেই। বৃহস্পতিবার এই মামলার রায় ঘোষণা করবেন বিচারক।
আদালত সূত্রে খবর, ধনিয়াখালি থানার অন্তর্গত জামাইবাটি কাপগাছি গ্রামের বাসিন্দা শেখ নজিবুলের সঙ্গে ২০০৬ সালে ধনিয়াখালিরই চক-সুলতান গ্রামের সাবিনা বেগমের বিয়ে হয়েছিল। তাঁদের দুই সন্তান হয়। এক ছেলে ও এক মেয়ে। বিয়ের কয়েক বছর পরে এলাকার এক মহিলার সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন নজিবুল। এই নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তি চলছিল। তা চরমে ওঠায় ২০১৫ সালের ২৫ অগস্ট রাতে বালিশ চাপা দিয়ে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন তিনি। দুই সন্তানের সামনেই গোটা ঘটনা ঘটে। তখন ছ’বছরের ছেলে সাহিল বাবাকে বাধাও দিতে গিয়েছিল।
পরে সাবিনার বাবা মতিয়ার রহমানের অভিযোগের ভিত্তিতে নজিবুলকে গ্রেফতার করে ধনিয়াখালি থানার পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ২৩ ডিসেম্বর চার্জশিট পেশ করেন তদন্তকারী অফিসার। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ৪৯৮/এ, ৩০২, ২০১ ধারায় মামলা হয়। ১২ এপ্রিল ২০২২ সালে বিচারকের কাছে বাবার বিরুদ্ধে গোপন জবানবন্দি দেয় ছেলে। মোট ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। বুধবার হুগলি জেলা আদালতের তৃতীয় অ্যাডিশনাল সেশন জাজ কৌস্তব মুখোপাধ্যায় সেই মামলায় নজিবুলকে দোষী সাব্যস্ত করেন। চুঁচুড়া আদালতের সরকারি আইনজীবী শঙ্কর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খুনের মামলায় দোষী ব্যক্তির যাবজ্জীবন অথবা ফাঁসির সাজা হতে পারে। আগামীকাল বিচারক সাজা ঘোষণা করবেন।’’
সরকারি আইনজীবী জানিয়েছেন, এই মামলায় উল্লেখ্য বিষয় হল, আদালতে এসে সাবিনা বেগমের ১৩ বছরের ছেলে সাহিলের সাক্ষী দেওয়া। তার যখন ছ’বছর বয়স, সে গোপন জবানবন্দি দিয়েছিল বিচারকের সামনে। আর ১৩ বছর বয়সে সাক্ষ্য দেয়। আদালতে যাওয়ার পথে দোষী নজিবুল অবশ্য তাঁর দোষ কবুল করতে চাননি।