জগৎবল্লভপুর ছোট কাউগাছিতে চাষের জমিতে চলছে মাটি কাটা। নিজস্ব চিত্র
বেশ কিছুদিন বন্ধ ছিল। ফের জগৎবল্লভপুরের নানা এলাকার চাষজমি থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া শুরু হয়েছে। এর জেরে যে সব জমি অক্ষত আছে, তারও চরিত্র নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন সংশ্লিষ্ট চাষিরা। তাঁদের দাবি, মাটিবোঝাই ট্রাক্টর তাঁদের জমির উপর দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ফলে, জমি চাষের অযোগ্য হয়ে উঠছে।
ইতিমধ্যে পোলগুস্তিয়ার ছোট কাউগাছি এলাকার চাষিরা প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের দ্বারস্থ হয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, সব জায়গা থেকেই অবৈধ ভাবে মাটি কাটা চলছে। যতটা গভীর করে মাটি কাটার কথা বলা হচ্ছে, তার চেয়েও গভীর করে কাটা হচ্ছে। যা নিয়ম বহির্ভূত। এর পিছনে শাসকদলের কিছু নেতার মদতেরও অভিযোগ তুলেছেন কেউ কেউ। শাসকদল অভিযোগ মানেনি। ব্লক ভূমি দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
গত বছরেও জগৎবল্লভপুরের কেদোর মাঠের জমি থেকে অবাধে মাটি কেটে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছিল। একই অভিযোগ উঠেছিল পাঁচলার জয়নগরেও। দু’টি ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ জানানো হয়। জেলা ভূমি দফতর মাটি কাটা বন্ধ করার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেয়। তার পর থেকে মাটি কাটা বন্ধ হয়ে যায়।
এই শীতের মরসুমে জগৎবল্লভপুরে ফের শুরু হয়েছে মাটি কাটা। কাউগাছির শেখ বলাই নামে এক চাষি বলেন, ‘‘মাটিবোঝাই ট্রাক্টর যাওয়ায় জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে। প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে জানিও কোনও লাভ হয়নি। বাধা দিতে গেলে হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে।’’ আর এক চাষি বলেন, ‘‘শাসকদলের নেতাদের মদতেই এ সব হচ্ছে। কিছু চাষির হাতে সামান্য টাকা ধরিয়ে জমি-মাফিয়ারা এই দৌরাত্ম্য চালাচ্ছে। চাষের জমির মাটি অন্যত্র রাতের অন্ধকারে চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে।’’
কিছু জমি-মালিকের দাবি, তাঁরা নিয়ম মেনেই মাটি কাটার ব্যবস্থা করেছেন। তাঁদের একজন নুরুল হুদা মিদ্যা বলেন, ‘‘সরকারি নিয়ম মেনে এবং যথাযথ টাকা জমা দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। যাঁরা অভিযোগ করছেন, তাঁদের জমি দিয়ে ট্রাক্টর বা কোনও গাড়ি যাচ্ছে না।’’
পুলিশ জানিয়েছে, মাটি কাটা রুখতে পুলিশ নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে গাড়ি আটক করা হয়েছে এবং মাটি কাটা বন্ধ করা হয়েছে।
চাষিদের অভিযোগ নিয়ে জগৎবল্লভপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা শেখ ইব্রাহিম কোনও মন্তব্য করতে চাননি। ওই এলাকাটি পাঁচলা বিধানসভা কেন্দ্রে পড়ে। পাঁচলার তৃণমূল বিধায়ক গুলশন মল্লিক বলেন, ‘‘এই রকম কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি খোঁজ নেব। গরিব মানুষের ক্ষতি করে কোনও কাজ করা যাবে না। সরকারি নিয়মকানুন মেনে মাটি কাটতে হবে।’’