Farming

ঝলসে যাচ্ছে আনাজ, উদ্বেগ চাষির

ফলন কমায় স্থানীয় বাজারগুলিতে আনাজের জোগান কমছে। লাফিয়ে বাড়ছে দাম। সপ্তাহখানেক আগেও হুগলির বিভিন্ন বাজারে পটল, বরবটি, উচ্ছের দাম ছিল ৪০-৫০ টাকা কেজি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আরামবাগ শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০২৪ ০৭:১৪
Share:

ঢ্যাঁড়স গাছের ফুল শুকিয়ে যাচ্ছে। গোঘাটের কামারপুকুর আদ্যাপীঠ মাঠে এলাকায়। — নিজস্ব চিত্র।

চাষে ধারাবাহিক বিপর্যয় থেকে হুগলির চাষিরা ঘুরে দাঁড়ানোর রাস্তা পাচ্ছেন না। গত ৩০ মে’র অতিবর্ষণে এই জেলায় বাদাম, তিল এবং গ্রীষ্মকালীন আনাজ (পটল, ঝিঙে, ঢেঁড়শ ইত্যাদি) চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়। তারপরেও যে সব আনাজ বেঁচে ছিল, প্রবল গরমে তারও পাতা ঝলসে এবং ফুল শুকিয়ে ফলন হচ্ছে না বলে চাষিদের উদ্বেগ বাড়ছে। তবে, এই গরমে তিল-বাদামে তেমন প্রভাব পড়েনি বলে জেলা কৃষি দফতর জানিয়েছে।

Advertisement

ফলন কমায় স্থানীয় বাজারগুলিতে আনাজের জোগান কমছে। লাফিয়ে বাড়ছে দাম। সপ্তাহখানেক আগেও হুগলির বিভিন্ন বাজারে পটল, বরবটি, উচ্ছের দাম ছিল ৪০-৫০ টাকা কেজি। এখন তা-ই হয়ে গিয়েছে ১০০ টাকা। ঝিঙের দাম ছিল ২০-৩০ টাকা কেজি। এখন ৮০ টাকা। শশা ছিল কেজিপ্রতি ৩০-৪০ টাকা। হয়েছে ৭০-৮০ টাকা।

প্রতিকূল আবহাওয়ায় তাঁদের লোকসানের বহর বাড়ছে জানিয়ে আরামবাগের রাংতাখালির প্রান্তিক চাষি সঞ্জীব মিদ্যের খেদ, “সপ্তাহ খানেক আগে ভারী বৃষ্টিতে ৫ কাঠা জমির বিভিন্ন ফসলের গাছ অনেক মরেছে। যে গাছগুলো বেঁচে আছে সেগুলিও ঠিক ভাবে না বাড়ায় ফলন কমেছে। এখন আবার রোদ ও গরমে পটল, বরবটি-সহ সব শাকসব্জির পাতা ঝলসে যাচ্ছে। ভাল ফুল আসছে না। এলেও কুঁড়িতেই শুকিয়ে ঝরে যাচ্ছে।” গোঘাটের মুকুন্দপুরে আড়াই কাঠা জমিতে ঢেঁড়শ চাষ করেছেন সহদেব নন্দী। তাঁর কথায়, ‘‘প্রতিদিন গড়ে ৮ কেজি করে ঢেঁড়শ উৎপাদন হওয়ার কথা। এ বার বৃষ্টিতে নষ্টের পর ফের রোদ-গরমের দরুন এক দিন অন্তর সাড়ে ৪ কেজি করে পাচ্ছি।”

Advertisement

একই সুরে পুরশুড়ার কেলেপাড়ার বাপ্পাদিত্য ধোলে, আরামবাগের রামনগরের বিদ্যাপতি বাড়ুই, খানাকুলের পিলখাঁর অভিজিৎ বাগরা জানিয়েছেন, আগের বৃষ্টিতেই অন্যতম অর্থকরী দু’টি ফসলের মধ্যে তিল চাষের ৯০ শতাংশ নষ্ট হয়েছে। যে গাছগুলো টিকে আছে, তার ফলনও অপুষ্ট। যেখানে বিঘাপ্রতি দেড়-দু’কুইন্টাল তিল পাওয়ার কথা, সেখানে ৫০-৭০ কেজির বেশি হচ্ছে না। তুলনামূলক ভাবে বাদামে ফসলটা কিছুটা বেশি পাওয়া গেলেও অঙ্কুর হয়ে যাওয়া, কালো দাগ হওয়া ও ছোট দানার কারণে দাম মিলবে না। সাধারণ ভাবে বিঘাপিছু বাদামের ফলন ৫-৭ কুইন্টাল। এ বার মিলছে গুণমানহীন সাড়ে ৩-৪ কুইন্টাল। এখন প্রতিদিন সেচ দিয়েও আনাজ রক্ষা করা যাচ্ছে না।

জেলা উদ্যানপালন দফতর সূত্রে জানা যায়, গরমের মরসুমে হুগলিতে প্রায় ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে আনাজ চাষ হয়। আনাজের ক্ষেত্রে কিছুটা উৎপাদন কমবে বলে জানিয়েছেন জেলা উদ্যানপালন আধিকারিক শুভদীপ নাথ। তিনি বলেন, ‘আর্দ্রতা বেশি থাকায় পটল ও ঝিঙের ফুল কিছুটা শুকিয়ে যায়। কিন্তু আমাদের আনাজ চাষের এলাকা সবই প্রায় সেচসেবিত। ফলে, ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কম। তবু চাষিদের এই সময় যথাযথ সেচের বন্দোবস্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement