নৌকা-বাড়ি: সাংসারিক কাজে ব্যস্ত সাবিত্রীদেবী। নিজস্ব চিত্র।
উনিশ দিন হল। ছেলে-বৌমা এবং নাতিকে নিয়ে এখনও নৌকাতেই দিন কাটছে গাদিয়াড়ার সাবিত্রী সর্দারের। ভরা কটালের জলোচ্ছ্বাসে ভেঙে গিয়েছে তাঁদের কাঁচাঘর।
রূপনারায়ণের ধারে বাস। তাই ইয়াস আসার খবর শোনা ইস্তক মন যে কু ডাকেনি, এমন নয়। কিন্তু রূপনারায়ণের বাঁধ ভেঙে জল যে ঘর গিলে নেবে, ভাবতে পারেননি সাবিত্রী। এখানকার আরও অনেক ক্ষতিগ্রস্তের মতো ত্রাণ শিবিরে যেতে পারতেন। যাননি। নৌকাতেই সংসার পেতেছেন পেশায় মৎস্যজীবী ওই মহিলা। নৌকাটাই যে রোজগারের একমাত্র ভরসা। সেটা যদি ভেসে যায়?
রূপনারায়ণে মাছ ধরে তাঁদের সংসার চলে। কিন্তু মাছই বা কই! সাবিত্রী বলেন, ‘‘ইয়াসের পর থেকে নদীতে আর তেমন মাছমিলছে না। কেন, কে জানে! দু’এক কেজি করে পাচ্ছি। তাতে আর কত রোজগার হয়!’’
ইতিমধ্যে অবশ্য প্রশাসনের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন ওই মহিলা। যাতে আবার ঘর তৈরি করে ফিরতে পারেন। শ্যামপুর-১ ব্লকের বিডিও সঞ্চায়ন পান বলেন, ‘‘কোনও পরিবার নৌকাতে দিন কাটাচ্ছে, এমন কোনও খবর পাইনি। খোঁজ নিয়ে দেখব। ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্তদের ‘দুয়ারে ত্রাণ’ প্রকল্পে আবেদন করতে বলা হয়েছিল। অনেক আবেদন জমা পড়েছে। তা খতিয়ে দেখার কাজ চলছে। ওই পরিবার যদি আবেদন করে থাকে, নিশ্চয়ই খতিয়ে দেখে সাহায্য করা হবে।’’
শ্যামপুর নাগরিক ফোরামের সম্পাদক উত্তম রায় চৌধুরী বলেন, ‘‘ইয়াসে শ্যামপুরের অনেক ক্ষতি হয়েছে। অনেক মানুষ গৃহহারা হয়েছেন। প্রত্যেকে যাতে ক্ষতিপূরণ পান, সে জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছি।’’