সাংবাদিকের পরিচয় দিয়ে একাধিক জায়গায় টাকা তোলার অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র
একটি মানবাধিকার সংগঠনের কর্মীর সাংসারিক ঝামেলা মেটানোর নাম করে মোটা টাকা নেওয়া এবং টাকার জন্য প্রতিনিয়ত তাঁকে চাপ দেওয়ার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পরে পুলিশ জানতে পারে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তিনি এ ভাবে প্রভাব খাটিয়ে একাধিক জনের কাছে টাকা তুলতেন। যদিও আদতে তিনি সাংবাদিকই নন। শনিবার অমিতাভ চক্রবর্তী নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, স্বাগতা ঘোষ চক্রবর্তী নামে এক তরুণীর শ্বশুরবাড়ি ব্যান্ডেলের রায়বাজার এলাকায়। ২০১৮ সালের ২৪ জানুয়ারি অভিষেক চক্রবর্তীর সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। স্বামী কর্মসূত্রে থাকেন গুজরাতে। চলতি বছরের ১৬ মার্চ চুঁচুড়া মহিলা থানায় একটি বধূ নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেন স্বাগতা। সাংসারিক সমস্যার জন্য বাপের বাড়িতে থাকেন তিনি।
স্বাগতার দাবি অনুযায়ী, তপসিয়ায় একটি অনুষ্ঠানে তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় অমিতাভের। তাঁর সঙ্গে ছিলেন অনিন্দিতা চক্রবর্তী নামে এক মহিলা। অমিতাভ জানান, তাঁরা পেশায় সাংবাদিক। বরাহনগর এবং উত্তরপাড়া দু’জায়গায় তাঁর বাড়ি।
অমিতাভের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি প্রায় জোর করেই স্বাগতাকে দিয়ে শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ করান। গত জানুয়ারিতে শ্বশুরবাড়ির সমস্যা নিয়ে সমঝোতার জন্য এক প্রস্থ আলোচনা হয়। মহিলা থানায় অভিযোগ দায়ের করার পর থেকে নানা ভাবে তাঁর কাছ থেকে টাকা নিতেন অভিযুক্ত। অভিযোগ, কখনও মহিলা থানার ওসি, কখনও চুঁচুড়া থানার আইসি-কে টাকা দিতে হবে বলে কয়েক খেপে প্রায় ৪০ হাজার টাকা নেন তিনি।
কিন্তু এর পর প্রায় প্রতিদিন কোনও না কোনও কারণ দেখিয়ে তিনি টাকা চাইতে থাকেন বলে অভিযোগ। এমনকি টাকা না দেওয়ায় শুক্রবার বরাহনগরে তরুণীর বাপেরবাড়িতে গিয়ে ঝামেলা করেন ওই ‘সাংবাদিক’। এর পর মানসিক ও আর্থিক চাপে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েন স্বাগতা। লালগড় থানায় তাঁর একজন পরিচিত পুলিশ অফিসারকে ঘটনার কথা বলেন। ওই পুলিশ অফিসার তাঁকে থানায় গিয়ে অভিযোগ করার পরামর্শ দেন।
থানায় স্বাগতা অভিযোগ করেছেন, তাঁর বিয়ের রেজিস্ট্রির কাগজ, নিমন্ত্রণপত্র, গয়না কেনার রসিদ-সহ দরকারি কাগজপত্র আটকে রাখেন অভিযুক্ত। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ গ্রেফতার করে অমিতাভকে। ধৃতের কাছ থেকে আসানসোলের একটি নিউজ পোর্টালের আই কার্ড পায় পুলিশ। তবে চুঁচুড়া থানার আইসি অনুপম চক্রবর্তী জানান, তাঁরা খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারেন ওই পরিচয়পত্রটি ভুয়ো। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে এ রকম একাধিক ব্যক্তির কাছে টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে অমিতাভের বিরুদ্ধে।