কিশোর জানান শারীরশিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক ছিলেন তিনি। ২০১৬ সালে অবসর নিয়েছেন। —নিজস্ব চিত্র।
৩৬ বছর ধরে শিক্ষকতা করেছেন। ২০১৬ সালে অবসর নিয়েছেন হুগলির মগরার আদি সপ্তগ্রাম হাই স্কুলের শিক্ষক কিশোর চট্টোপাধ্যায়। তাঁকেই ধর্মঘটে স্কুলে অনুপস্থিত থাকার কারণ দর্শানোর নোটিস দিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। চিঠি পেয়ে হতবাক বৃদ্ধ শিক্ষক। উত্তেজনায় তাঁর মন্তব্য ‘‘হচ্ছেটা কী!’’
বকেয়া মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ-র দাবিতে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। গত ১০ মার্চ ধর্মঘটও পালন করেন তাঁরা। ‘সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ’-এর ডাকে ওই ধর্মঘটে শামিল হন রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী এবং অন্যান্য কর্মী। তবে ধর্মঘটে যোগ দিলে বেতন কাটা যাওয়ার পাশাপাশি শোকজ় করা হবে বলেও কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিল রাজ্য। ধর্মঘটের আগে সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল ওই দিন অনুপস্থিত থাকলে এক দিনের বেতন কাটা যাবে, সার্ভিস রেকর্ড ব্রেক পর্যন্ত হতে পারে। সরকারি নির্দেশকে উপেক্ষা করেই সে দিন বিভিন্ন সরকারি দফতর, স্কুলে হাজিরা কম ছিল। যাঁরা সে দিন স্কুলে অনুপস্থিত ছিলেন তাঁদের শোকজ় করা হয়েছে। শিক্ষকদের কাছে শোকজ় নোটিস পৌঁছে দিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। তেমনই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কিশোরের কাছেও একটি নোটিস গিয়েছে। ওই শিক্ষকের কথায়, ‘‘আমি তো অবাক।’’
কিশোর জানান শারীরশিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক ছিলেন তিনি। ২০১৬ সালে অবসর নিয়েছেন। প্রাক্তন সহকর্মীরা তাঁকে শুক্রবার ফোন করে শোকজ় নোটিসের কথা জানান। তার পর হোয়াটসঅ্যাপে চিঠির ছবিও পান। প্রাক্তন শিক্ষক জানান, শুধু তিনিই নন। তাঁর আগে বা পরে অবসর নিয়েছেন এমন অনেককে শোকজ় করা হয়েছে। স্কুলের প্রাক্তন করণিক, যিনি ২০১৯ সালে মারা গিয়েছেন, তাঁকেও শোকজ় করা হয়েছে। বিস্মিত কিশোরের প্রশ্ন, ‘‘কতজন শিক্ষক আছেন, কতজন অবসর নিয়েছেন, তার কোনও তথ্যই কি পর্ষদের কাছে নেই?’’
এ নিয়ে এবিটিএ-এর হুগলি জেলা সম্পাদক প্রিয়রঞ্জন ঘটক বলেন, ‘‘প্রশাসন স্থবির হয়ে গিয়েছে। কী চলছে তা বোঝাই যাচ্ছে।’’