Illegal Constructions

অবৈধ অংশ ভাঙার পরেও সারাই করে বিক্রি! রুখতে কঠোর হাওড়া

হাওড়া পুরসভা সূত্রের খবর, গত কয়েক বছরে পুরসভার খাতাতেই এলাকার অন্তত পাঁচ থেকে সাত হাজার বেআইনি নির্মাণ তালিকাভুক্ত হয়েছে। তার মধ্যে গত আড়াই বছরে ভাঙা হয়েছে সব চেয়ে বেশি অবৈধ নির্মাণ।

Advertisement

দেবাশিস দাশ

হাওড়া শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৪ ০৫:৩০
Share:

মধ্য হাওড়ার নেতাজি সুভাষ রোডে বেআইনি বহুতল। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

পুরসভার ঘোষিত অবৈধ নির্মাণ। পুলিশের সাহায্যে পুর ইঞ্জিনিয়ারেরা গিয়ে সেই অবৈধ অংশ ভেঙে দিচ্ছেন। তার পরেও সেই ভেঙে ফেলা অংশ আবার মেরামত করে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে সংশ্লিষ্ট ফ্ল্যাট বা বাড়ি। সেটির আইনি বৈধতা আছে কি না, তা না জেনেই অনেকে কিনে নিচ্ছেন। সাম্প্রতিক সময়ে হাওড়া পুর এলাকায় এই প্রবণতাই দেখা যাচ্ছে প্রোমোটারদের একাংশের মধ্যে। আর এই বেপরোয়া প্রবণতায় নাজেহাল বর্তমান পুর প্রশাসকেরা। যাঁরা এই অবৈধ কারবারে জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ করার জন্য হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের দ্বারস্থ হয়েছেন পুরকর্তারা।

Advertisement

হাওড়া পুরসভা সূত্রের খবর, গত কয়েক বছরে পুরসভার খাতাতেই এলাকার অন্তত পাঁচ থেকে সাত হাজার বেআইনি নির্মাণ তালিকাভুক্ত হয়েছে। তার মধ্যে গত আড়াই বছরে ভাঙা হয়েছে সব চেয়ে বেশি অবৈধ নির্মাণ। সেই সংখ্যা আড়াইশোর কাছাকাছি। এখনও প্রতিদিন অবৈধ নির্মাণ ভাঙার কাজ চলছে। তা সত্ত্বেও অভিযোগ উঠছে, হাওড়ার ৫০টি ওয়ার্ড জুড়ে গলিপথগুলির মধ্যে মাথা তুলছে বেআইনি বহুতল। যার পিছনে মদত রয়েছে রাজনৈতিক নেতাদের একাংশের। তেতলার অনুমোদন নিয়ে চারতলা বা পাঁচতলা তৈরি করা কার্যত রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে এক শ্রেণির প্রোমোটারের কাছে।

বেআইনি বাড়ি ভেঙে দেওয়ার পরেও তা ফের সংস্কার করে বিক্রি করার খবর সম্প্রতি পুরসভার বিল্ডিং বিভাগে আসতেই নড়ে বসেন পুরকর্তারা। এই ধরনের বহুতলগুলি চিহ্নিত করেন বিল্ডিং বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারেরা। সেই তালিকা অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট প্রোমোটারদের নোটিস পাঠানো হয়। কয়েকটি নির্মাণ ভেঙেও দেয় পুরসভা। তার পরেও অবৈধ নির্মাণ দ্বিতীয় বার তৈরি করার প্রবণতায় লাগাম টানা যায়নি।

Advertisement

পুরসভা সূত্রে জানা যাচ্ছে, বিপ্লবী গণেশ ঘোষ সরণি, নেতাজি সুভাষ রোড, ব্যাতাইতলা বাজারের পিছনে জিটি রোড, কালী ব্যানার্জি লেন, গদাধর মিস্ত্রি সেকেন্ড বাইলেন, ওলাবিবিতলা লেনে মাথা তুলেছে এই ধরনের বহুতল। সেগুলি চিহ্নিত করে ভেঙে ফেলার নোটিস দেওয়া হলেও বন্ধ হয়নি নির্মাণকাজ।

পুর বিল্ডিং বিভাগের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে গেলে পুলিশি বন্দোবস্ত করা থেকে শুরু করে নির্মাণ ভাঙার দল-সহ যন্ত্রপাতি নিয়ে প্রতিটি বাড়িপিছু খরচ হয় অন্তত ১০ হাজার টাকা। সেই টাকা অভিযুক্ত প্রোমোটারের থেকে জরিমানা বাবদ চাওয়া হলেও অনেক ক্ষেত্রে তা জমা পড়ে না। ফলে, সেই ব্যয় বহন করতে হয় পুরসভাকেই।’’

অবৈধ অংশ ভেঙে দেওয়ার পরেও ফের সেটি তৈরির প্রবণতা বন্ধ করতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষপাতী পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘এই ধরনের বেআইনি নির্মাণ ভেঙে দেওয়ার পরে যে আবার তৈরি হচ্ছে, আমরা জানি। একটি তালিকাও তৈরি হয়েছে। ওই বহুতলগুলির প্রোমোটার ও জমির মালিকদের বিরুদ্ধে এফআইআর করে যাতে তাঁদের গ্রেফতার করা যায়, সে ব্যাপারে হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের সঙ্গে কথা বলছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement