ভদ্রেশ্বর পুরসভার টিকিয়াপাড়ায় প্রকল্প। নিজস্ব চিত্র।
গঙ্গা পারের প্রায় দু’লক্ষ বাসিন্দার শহর চন্দননগরে দু’টি জলপ্রকল্প রয়েছে। একটি বোড়াইচণ্ডীতলায় এবং অপরটি গোন্দলপাড়ায়। দু’টি মিলিয়ে ১১ মেগা গ্যালন জল উৎপাদিত হয় পুরসভার ৩৩টি ওয়ার্ডে। বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ওই এলাকার ৮০ শতাংশে পাইপ বসানোর কাজ হয়ে গিয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। মোট ৫৮ হাজার বাড়িতে ফেরুল (জল সংযোগ) লাগানোর কাজ করতে হবে পুর কর্তৃপক্ষকে। সেই কাজও
শুরু হয়েছে।
পুরসভার নিজস্ব ভূ-গর্ভস্থ পাম্প রয়েছে ৪৭টি। এরপরও কিন্তু জল সরবরাহের ঘাটতির অভিযোগ রয়েছে পুরসভার মোট ৭টি ওয়ার্ডে। সেগুলি হল ১৭, ২২, ২৩, ২৪, ২৮, ২৯ ও ৩০। তার মধ্যে ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের গর্জি এলাকায় জলের সমস্যা সবথেকে বেশি। এ বিষয়ে পুরসভার ডেপুটি মেয়র মুন্না আগরওয়াল বলেন, ‘‘কিছু জায়গায় জলের চাপের সমস্যা রয়েছে। তার মানে এই নয়, শহরবাসী জল পান না। আমরা সর্তক আছি। কাজ চলছে। যে’টুকু সমস্যা রয়েছে, ভবিষ্যতে তাও থাকবে না।’’
চাঁপদানি পুরসভার ২২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৮টিতে মাটির নীচে পাইপ বসানোর কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। তবে এই এলাকায় গঙ্গার জল পরিশুদ্ধ করার প্রকল্পই এখনও হয়নি। উত্তরপাড়ার-কোতরং এলাকার জল প্রকল্প থেকে সেখানে জল পৌঁছে যাবে। পুরপ্রধান সুরেশ মিশ্র বলেন, ‘‘আমাদের এলাকায় মোট ১ লক্ষ ৪০ হাজার মানুষের বাস। আশা করছি, উত্তরপাড়া প্রকল্পের জল এলে এখানে পরিশুদ্ধ পানীয় জলের
সমস্যা মিটবে।’’
চাঁপদানির থেকে ভদ্রেশ্বরের পরিস্থিতি ভাল। পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের টিকিয়াপাড়ায় গঙ্গা থেকে জল তুলে নিজস্ব প্রকল্পের কাজ চালু হয়েছে বছর দুই আগে। পুরপ্রধান প্রলয় চক্রবর্তী বলেন,‘‘পুরসভার ২২টা ওয়ার্ডের মধ্যে পাইপ বসানোর কাজ ৯৫ শতাংশ হয়ে গিয়েছে। মোট ১০ হাজার বাড়িতে ফেরুল লাগানোর কাজও হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যে।’’
যদিও পরিবেশবিদদের পরামর্শ, মাটির নীচে জলস্তর রক্ষায় জলের অপচয় কমানোর পাশাপাশি স্কুল, কলেজ, সরকারি প্রতিষ্ঠানে বৃষ্টির জলের উপর নির্ভরতা বাড়াতে হবে। পরিবেশবিদ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন,‘‘জলের অপচয়ের ব্যাপারে মানুষকে সজাগ করার ক্ষেত্রে পুরসভাগুলির অভিযান চালানো উচিত। যে সব পুরসভা বাড়ি বাড়ি জলের মিটার বসানোর জরুরি কাজ করে ফেলেছে, তাদের সাধুবাদ প্রাপ্য।’’ (চলবে)