বকেয়া বিদ্যুতের বিল। প্রতীকী চিত্র।
টাকার অঙ্কটা চমকে দেওয়ার মতো। মোট ২৮ কোটি ৭৬ লক্ষ।
হুগলির ত্রি-স্তর পঞ্চায়েতে ওই পরিমাণ বিদ্যুতের বিল বকেয়া রয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগটাই গ্রাম পঞ্চায়েতের। কেন্দ্রীয় পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের তহবিল থেকে জনকল্যাণমূলক পরিষেবায় ত্রি-স্তর পঞ্চায়েত বিদ্যুতের বিল মেটাতে পারবে বলে প্রায় এক বছর আগেই জানানো হয়েছিল। তা সত্ত্বেও, কী করে অত টাকা বকেয়া রয়ে গেল, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
হুগিল ত্রি-স্তর পঞ্চায়েতের মোট ২৮ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা বিদ্যুতের বিল এখনও শোধ হয়নি বলে জানিয়েছেন জেলা বিদ্যুৎ দফতরের রিজিয়োনাল ম্যানেজার কিঙ্কর সিংহ। তবে, ওই বিল কতদিনের তা জানা যায়নি। অবিলম্বে বিল পরিশোধের ব্যবস্থা করতে জেলা প্রশাসনের কাছে গত শুক্রবার চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্য গ্রামোন্নয়ন দফতরের বিশেষ সচিব।
বিল পরিশোধ করা হচ্ছে জানিয়ে হুগলি জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘পঞ্চায়েতগুলিতে বিভিন্ন পরিষেবায় বিদ্যুৎ বিল অনেক হয়ে যায়। অনেক দিন ধরে তা পরিশোধ হচ্ছিল না। এ বার অর্থ কমিশনের নিঃশর্ত তহবিল থেকে (আনটায়েড ফান্ড) তা মেটানোর ব্যবস্থা থাকায় সুরাহা হবে।’’
হুগলিতে গ্রাম পঞ্চায়েতের সংখ্যা ২০৭। পঞ্চায়েত সমিতি রয়েছে ১৮টি। বকেয়া বিলের সিংহভাগই যে হেতু পঞ্চায়েতগুলির, তাই বেশি প্রশ্ন উঠছে তাদের ঘিরেই।
জেলার বিভিন্ন পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধায়ক বা সাংসদ তহবিল, কিংবা অর্থ কমিশন-সহ সরকারি বিভিন্ন তহবিলে রাস্তায় রাস্তায় হাইমাস্ট-সহ প্রচুর আলোর ব্যবস্থা হয়েছে, পরিস্রুত পানীয় জলের যন্ত্র বা সজলধারা প্রকল্প হয়েছে। সে সব নির্মাণের পর স্থানীয় পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতির উপর বিদ্যুৎ বিল এবং তদারকির দায় বর্তায়। এতদিন পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল থেকেই বিদ্যুতের বিল মেটানোর ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু পঞ্চায়েতে দুর্বল নিজস্ব তহবিল থেকে সেই বিল মেটানো যাচ্ছিল না। পঞ্চায়েতপিছু ২ লক্ষ টাকা থেকে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বাকি থেকে যাওয়ার অনেক নজির আছে।
গোঘাট-২ পঞ্চায়েতের প্রধান তপন মণ্ডল বলেন, ‘এখন একমাত্র ভরসা পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের তহবিল। তা থেকে আগে গ্রামের জরুরি পরিষবাগুলি দেওয়া হচ্ছে। পঞ্চায়েতকে হস্তান্তর করা বিভিন্ন পরিষেবার মধ্যে আমাদের বৈদ্যুতিক শ্মশান চুল্লিরই প্রায় ১০ লক্ষ টাকা বিল বাকি। এ ছাড়া, কামারপুকুর চটি মোড়-সহ বিভিন্ন জায়গায় পানীয় জল, আলো খাতেও বেশ কিছু বাকি আছে। আগামী মাসের মধ্যেই বিলের অনেকটাই পরিশোধ করা হবে।’’ একই কথা জানিয়েছেন খানাকুল-১ ব্লকের ঘোষপুর পঞ্চায়েতের প্রধান হায়দার আলি, পুরশুড়ার ভাঙামোড়া পঞ্চায়েতের প্রধান স্নিগ্ধা বাইরিও।