আরামবাগের তিরোল বাস স্ট্যান্ডের এই যাত্রী প্রতীক্ষালয়ে পুজো মণ্ডপ নিয়েই বিতর্ক।
বিধায়কের এলাকা উন্নয়ন তহবিলের টাকায় বিধানসভা ভোটের আগে যাত্রী প্রতীক্ষালয় তৈরি হয় আরামবাগের তিরোল বাস স্ট্যান্ডে। সেই প্রতীক্ষালয় দখল করে পুজো মণ্ডপ তৈরির অভিযোগ উঠল তৃণমূল প্রভাবিত স্থানীয় একটি ক্লাবের বিরুদ্ধে। গ্রামবাসী এ নিয়ে বৃহস্পতিবার গণস্বাক্ষর সংবলিত অভিযোগপত্র জমা দেন ব্লক, জেলা এবং পুলিশ প্রশাসনের কাছে।
আরামবাগের বিডিও কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। পুজোটির ছাড়পত্র এখনও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” ওই পুজো কমিটির সম্পাদক, তৃণমূলের সুদীপ্ত চক্রবর্তী আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিকাশ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ। তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টা প্রশাসন দেখছে। জনগণের অসুবিধা হয়, এমন কিছু করা হবে না।”
অভিযোগকারীরা জানান, পুজোটি এ বার ২৩ বছরে পা দিল। গত বছর পর্যন্ত ওই পুজো হয়েছে বাস স্ট্যান্ডে। এ বারে পাশে জায়গা থাকা সত্ত্বেও ক্লাবের কর্মকর্তা কয়েকজন তৃণমূল নেতা গা-জোয়ারি করে প্রতীক্ষালয়টি দখল করে মণ্ডপ করেছেন বলে তাঁদের অভিযোগ। এতে জন পরিষেবায় ব্যাঘাত সৃষ্টির আশঙ্কা করছেন তাঁরা। প্রতীক্ষালয়ে পুজো করা যাবে না বলে তাঁরা দাবি তুলেছেন।
অভিযোগকারীদের মধ্যে সমীর মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই পুজোয় আমরা সকলেই চাঁদা দিই। সরকারি অনুদান হিসেবেও ৫০ হাজার টাকা পেয়েছে ক্লাবটি। এ বার যাত্রী প্রতীক্ষালয়ে পুজোর আয়োজন মানা হবে না।”
যাত্রী প্রতীক্ষালয়ের নামের সঙ্গে ‘সাংস্কৃতিক মঞ্চ’ও সংযুক্ত রয়েছে। এ নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে গ্রামবাসীর। আরামবাগের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা বলেন, “পৃথক জায়গা ছিল না। তা ছাড়া, দুটোই তো জনগণের পরিষেবার জন্যই। শুনেছি, যাদের জায়গা, সেই পূর্ত দফতর অনুমতি দিয়েছে।”
পুজোটির চূড়ান্ত অনুমতি ব্লক প্রশাসন না দিলেও আগে পঞ্চায়েত এবং পূর্ত দফতরের ছাড়পত্র মিলেছে। তিরোল পঞ্চায়েতের প্রধান আব্দুস সুকুর বলেন, “গ্রামের পুজোর ক্ষেত্রে প্রাথমিক ছাড়পত্র পঞ্চায়েতকেই দিতে হয়। মাত্র চার দিনের ব্যাপার। তাই অনুমতি আটকাইনি। ওই প্রতীক্ষালয়টি একই সঙ্গে সাংস্কৃতিক মঞ্চ তো বটে।” পূর্ত দফতরের মহকুমা সহকারী বাস্তুকার সুনীতি বিশ্বাস বলেন, “রাস্তার পিচ এবং ফুটপাত ফাঁকা রাখা-সহ আমাদের শর্ত আরোপ করে অনুমতি দিয়েছি। সরাকরি কোন সম্পত্তি নষ্ট বা জনগণের অসুবিধা করা চলবে না। সেই শর্ত মেনে পুজো হচ্ছে কি না, পুলিশ এবং প্রশাসন দেখবে।”