ছিপ হাতে দিলীপ ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।
পরনে দুধসাদা পাঞ্জাবি-পাজামা, গলায় দেওয়া উত্তরীয়। চেনা পোশাকে অচেনা মেজাজে দিলীপ ঘোষ এ বার ছিপ হাতে। ঘণ্টা দুয়েকের চেষ্টায় অবশ্য পুঁটি তুললেন ছিপে। তাঁর দলের এক কর্মীর ছিপে উঠল রূপচাঁদ মাছ। তার পরেই মাছধরায় রণে ভঙ্গ দিয়ে প্রাক্তন সাংসদ, বিজেপি নেতা দিলীপ জানালেন, ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে ‘বড় মাছ’ ধরবেন। এখন থেকে তার অনুশীলন শুরু করেছেন।
বিজেপির হুগলি জেলা সভাপতি তুষার মজুমদারের পান্ডুয়ার বাড়িতে গিয়েছিলেন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ। মঙ্গলবার সেখান থেকে বালিখালে চলে যান মাছ ধরতে। সঙ্গে দলীয় নেতাকর্মীরা। খোলভাজা, ম্যাতা, পিঁপড়ের ডিম, পাউরুটি দিয়ে টোপ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু তাতেও জমল না। তার পর পাউরুটির টোপ ঘি-মাখনে ডুবিয়ে হুইল ছিপ নিয়ে মাছ ধরতে বসেছিলেন দিলীপ। কিন্তু মাছের আনাগোনা না দেখে আরও দু’-চার জায়গায় টোপ ফেলেন বিজেপি কর্মীরা। পাশের একটি পুকুরেও ছিপ নিয়ে বসে পড়েন দিলীপরা। তবে শেষমেশ একটি পুঁটিমাছেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে বিজেপি নেতাকে।
মাছধরা ছেড়ে দিলীপ বলেন, ‘‘বালিখালের জল গভীর। এখানে বড় মাছ আছে। তা ধরতে আলাদা কায়দা দরকার। আমরা পুঁটি থেকে রূপচাঁদা দিয়ে শুরু করলাম। ছাব্বিশের আগে বড় মাছ ধরব। তার প্র্যাকটিস করছি।’’ কিন্তু ভোটের বছরখানেক আগে তো আর এক বিজেপি বিধায়ক তৃণমূলে চলে গেলেন। সোমবার তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন হলদিয়ার বিধায়ক তাপসী মণ্ডল। দিলীপের দাবি, নির্বাচন এলে এমন একটু-আধটু অদলবদল সব জায়গায় হয়। গত বিধানসভা ভোটে যেমন অনেকে দলবদল করে বিজেপিতে গিয়েছিলেন। বিজেপি নেতার কথায়, ‘‘মানুষ আমাদের সঙ্গে এসেছিলেন। তাঁদের কাউকে কাউকে আমরা টিকিটও দিয়েছি। কেউ জিতেছেন, কেউ জেতেননি। অনেকে আবার চলে (পুরনো দলে) গিয়েছেন। তাঁরা কী ভাবছেন জানি। ভাবছেন, বিজেপি জিততে পারবে কি না, তাই ‘সেফ’ (নিরাপদ) জায়গায় যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। এটা পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির অংশ।’’ দিলীপের সংযোজন, ‘‘পার্টিতে নতুন লোক না এলে দল বাড়বে কী করে। তৃণমূল দলটাই তো এ ভাবে তৈরি হয়েছে।’’ তার পর গলায় খানিক জোর এনে তিনি বলেন, ‘‘২০২৬-এর আগে এবং পরে পদ্ম ফুটবে এবং পদ্ম ফুটতেই থাকবে। অপেক্ষা করুন।’’
অন্য দিকে, দিলীপের মাছধরা নিয়ে টিপ্পনী কেটেছে তৃণমূল। হুগলি জেলা তৃণমূলের সম্পাদক অসিত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পান্ডুয়ায় এসে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ একটি পুঁটিমাছ ধরেছেন। এতেই বোঝা যায় বিজেপি ভাল চার তৈরি করতে পারছে না। বিজেপি আসলে মাছই ধরতে পারছে না। বরং যারা আছে, তারাও জাল ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। আর একটু অপেক্ষা। তার পর দেখবেন তৃণমূল কার্যালয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ এসে ধরা দেবে।’’