Diarrhea

জল নামতেই ডায়রিয়ার প্রকোপ তিন পঞ্চায়েতে

ওই তিন পঞ্চায়েত এলাকায় এখনও কয়েকটি জায়গায় ফুটখানেক করে জল নিকাশি বাকি। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, জেগে উঠা জায়গায় মরা মাছ, ইঁদুর, সাপের মতো মরা প্রাণী আর পচা ঝোপঝাড়ের দুর্গন্ধে দূষণ ছড়াচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খানাকুল শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:২৯
Share:

খানাকুল ২ ব্লকে কোমরসমান জল পেরিয়ে পরিষেবা দিতে যাচ্ছেন আশাকর্মীরা। —নিজস্ব চিত্র।

নিম্নচাপের বৃষ্টি এবং ডিভিসি-র ছাড়া জলে প্লাবিত খানাকুল ২ ব্লকের তিনটি পঞ্চায়েতের (ধান্যগোড়ি, মাড়োখানা এবং জগৎপুর) সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি হলেও এ বার ভোগাচ্ছে ডায়রিয়া। ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা অবশ্য নানা প্রতিকূলতা আক্রান্তদের কাছে পৌঁছে চিকিৎসা চালাচ্ছেন বলে গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন।

Advertisement

ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক রক্তিম চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘বিক্ষিপ্ত ভাবে ১৫০-২০০ জনের ডায়রিয়ার চিকিৎসা চলছে তাঁদের বাড়িতে গিয়ে। চার জন ব্লক হাসপাতালে ভর্তি আছেন। সব স্তরের স্বাস্থ্যকর্মীরা সতর্ক আছেন।’’

ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই তিন পঞ্চায়েত এলাকায় এখনও কয়েকটি জায়গায় ফুটখানেক করে জল নিকাশি বাকি। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, জেগে উঠা জায়গায় মরা মাছ, ইঁদুর, সাপের মতো মরা প্রাণী আর পচা ঝোপঝাড়ের দুর্গন্ধে দূষণ ছড়াচ্ছে। একই কথা জানিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্লকের পঞ্চায়েত প্রধানদের অনেকের অভিযোগ, প্লাবিত এলাকা পরিশোধনে প্রয়োজনীয় ব্লিচিং পাউডার মিলছে না। বিষয়টা নিয়ে ব্লক প্রশাসন এবং ব্লক স্বাস্থ্য দফতর উদাসীন।

Advertisement

এখনও দু’টি জায়গায় (কাগনান ও ঘোড়াদহ) ফুটখানেক জল জমে রয়েছে জানিয়ে ধান্যগোড়ি পঞ্চায়েতের প্রধান কার্তিক ঘোড়ার অভিযোগ, ‘‘আমার এলাকার ১৯টি বুথের জন্য মাত্র তিন ব্যাগ (২৫ কেজির ব্যাগ) ব্লিচিং পেয়েছি। সেই ব্লিচিংয়ের সঙ্গে আবার চুন মেশাতে হবে পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল থেকে। চুন দেয়নি। এক কেজি ব্লিচিংয়ের সঙ্গে সর্বোচ্চ ৮ কেজি চুন মিশিয়েও অর্ধেক বুথ এলাকা পরিশোধন করা যাবে না।’’

একই অভিযোগ তুলে মাড়োখানা পঞ্চায়েতের প্রধান টিঙ্কু দোলুই এবং জগৎপুরের উপপ্রধান সঞ্জিত মণ্ডলরা জানান, এলাকা পরিশোধনের জন্য আরও অন্তত তিন-চার বস্তা করে ব্লিচিং দরকার। বিষয়টি ব্লক প্রশাসন এবং ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের নজরে আনা হয়েছে।

উদাসীনতার অভিযোগ ঠিক নয় জানিয়ে ব্লক প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে, বিষয়টি ব্লক স্বাস্থ্য দফতর গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। ওই দফতর থেকেই ব্লিচিং দেওয়া হয়েছে। ব্লক অফিস থেকে খালি পঞ্চায়েতগুলিতে সরবরাহ করা হয়েছে। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘ব্লক প্রশাসনের চাহিদা মতোই আমাদের কাছে মজুত থাকা ৭৫ বস্তার মধ্যে প্রথম দফায় ১১টি পঞ্চায়েতে ৪টি করে দেওয়া হয়েছে। ফের পঞ্চায়েতগুলির প্রয়োজন জেনে বৃহস্পতিবার দেওয়া হবে।’’ তিনি আরও জানান, দ্বিতীয় দফায় যে সব পঞ্চায়েত এলাকার বেশি জায়গা জলমগ্ন হয়নি, সেখানে বেশি না দিয়ে পঞ্চায়েতের প্রয়োজনীয়তা বুঝে দেওয়া হবে।

তবে, প্লাবিত এলাকাগুলির মধ্যে ধান্যগোড়ির কাগনানের সুমন্ত সামন্ত, মাড়োখানার হানুয়ার শেখ আব্দুল, জগৎপুরের গড়েরঘাটের বিমল মাইতির মতো কিছু গ্রামবাসী জানান, প্রশাসনের মুখাপেক্ষী না হয়ে তাঁরা পাড়ায় চাঁদা তুলে ব্লিচিং কিনে সাধ্যমতো এলাকা দূষণমুক্ত করার চেষ্টা করছেন। বিক্ষিপ্ত ভাবে ডায়রিয়া ছাড়াও জ্বর, চর্মরোগও দেখা যাচ্ছে। সাপের উপদ্রবও বেড়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা অবশ্য জল ভেঙেই গ্রামে আসছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement