মৃত শ্রেয়াংশু শর্মা। —ফাইল চিত্র।
বাড়িতেই খুন হয়েছে আট বছরের হুগলির কোন্নগরের শিশু শ্রেয়াংশু শর্মা। শুক্রবার সন্ধ্যার সেই ঘটনার পর একটা গোটা দিন কেটে গিয়েছে। তদন্ত এখনও চলছে। নমুনা সংগ্রহ করেছে ফরেন্সিক দল। তবে অভিযুক্তেরা এখনও অধরা। এই প্রেক্ষিতে রবিবার সিআইডি তদন্ত চাইল মৃত শিশুর পরিবার। তাদের দাবি, পুলিশের তদন্তের উপর আস্থা আছে। কিন্তু তার পরও সিআইডি তদন্ত চাইছে তারা।
বাবা-মা কাজের সূত্রে বাইরে ছিল। স্কুলপড়ুয়া শ্রেয়াংশু একটা ঘরে টিভি দেখছিল। আচমকা ওই ঘুরে ঢুকে শিশুটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান পরিবারের এক সদস্যা। তার পর প্রতিবেশীরা সবাই শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। দেহে একাধিক ক্ষত এবং মাথায় আঘাতের চিহ্ন দেখে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান খুন করা হয়েছে আট বছরের শিশুকে।
শ্রেয়াংশুর বাবা পঙ্কজ শর্মা অভিযোগ করেন, একাধিক ভারী বস্তু দিয়ে ছেলেকে মারা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘এটা ব্রুটালি মার্ডার।’’ এমন একট ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। চন্দননগর পুলিশ কমিশনার থেকে পদস্থ পুলিশ আধিকারিকেরা সরেজমিনে তদন্তে করেছেন। শনিবার সিআইডি-র ‘ফিঙ্গারপ্রিন্ট এক্সপার্ট’ এসেছিলেন নমুনা সংগ্রহ করতে। রবিবার আসে ফরেন্সিক দল। এক ঘন্টা ধরে তারা বাড়িময় ঘুরে ঘুরে নমুনা সংগ্রহ করে। ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ অভিজিৎ মান্ডি বলেন, ‘‘রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করলে অনেক রক্তপাত হয়। সেই রকম রক্তপাত দেখা গিয়েছে এই কেসে।’’
মৃতের বাবা পঙ্কজ জানান, মেডিক্যাল রিপোর্ট নিয়ে গিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তিনি পুলিশ প্রশাসনকে বিশেষ ভাবে অনুরোধ করেছেন, যাতে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। পুত্রহারা বাবা বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত ভালই কাজ করছে। আশা করব, কয়েক দিনের মধ্যেই ফল পাওয়া যাবে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘রিপোর্ট আসা পর্যন্ত দেখব। পুলিশের তদন্তে আস্থা আছে। তবে সিআইডি তদন্ত হলে ভাল হত।’’
অন্য দিকে, কোন্নগরের আদর্শনগরের বাসিন্দারা শ্রেয়াংশু খুনের অপরাধীদের গ্রেফতারির দাবিতে পথে নামছেন। রবিবার বিকালে শান্তি মিছিলের আয়োজন করেছেন তাঁরা। স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্জয় শুক্লা বলেন, ‘‘এখনো পর্যন্ত পুলিশ অন্ধকারে রয়েছে। খুনের কারণও বোঝা যাচ্ছে না। আমরা চাইব, পুলিশ প্রশাসন তাড়াতাড়ি এই ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করবে এবং দোষীদের শাস্তি দেবে।’’