বিপজ্জনক: ত্রিফলা বাতিস্তম্ভে খোলা তার। হাওড়ার বেনারস রোডে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।
কোনও স্তম্ভের তিনটি মাথার একটি নেই। কোনওটি হেলে রয়েছে। কোনওটিতে বিদ্যুৎ সংযোগ থাকলেও আলো জ্বলে না। সব চেয়ে বিপজ্জনক হল, একাধিক ত্রিফলা স্তম্ভের লুপ বক্স এখনও খোলা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। আর সেখান থেকে বেরিয়ে আছে বিদ্যুৎবাহী তার। হাওড়া পুর কর্তৃপক্ষের সাম্প্রতিক নির্দেশের পরেও বিপদের ছবিটা সেই একই রয়ে গিয়েছে। উল্লেখ্য, গত বছর এমনই ভরা বর্ষায় ত্রিফলার কারণে হাওড়া পুরসভার সামনে মৃত্যু হয়েছিল এক তরুণীর।
এ বার বর্ষা শুরু হতেই তাই গত বছরের সেই অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে জুন মাসে ত্রিফলা রক্ষণাবেক্ষণকারী ৯টি ঠিকাদার সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করেন হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী। বৈঠকে তিনি চারটি নির্দেশ দিয়েছিলেন। যার মধ্যে একটি ছিল, ত্রিফলা থেকে হুকিং আটকাতে সমস্ত খোলা লুপ বক্স বন্ধ করতে হবে। কারণ, সেখান থেকে বেরিয়ে থাকা তার জমা জলের কারণে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু, তার পরেও ত্রিফলার একই বেহাল দশা দেখা গিয়েছে উত্তর থেকে দক্ষিণ হাওড়ার বিভিন্ন জায়গায়। বিশেষ করে অলিগলিতে। সব থেকে খারাপ অবস্থা উত্তর হাওড়ার বেলগাছিয়া এলাকার বেনারস রোড, বামনগাছি, সালকিয়া চৌরাস্তায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, হাওড়ার ৪৮০০টি ত্রিফলার মধ্যে ৫০ শতাংশ জ্বলে না। কোনও রক্ষণাবেক্ষণ নেই। বর্ষায় সেই সব আলোকস্তম্ভই প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে।
বেনারস রোডের বাসিন্দা সমর দাস বলেন, ‘‘উত্তর হাওড়ার যে সব এলাকায় জল জমে, সেখানে ত্রিফলা স্তম্ভের বক্স খোলা পড়ে আছে। আর সেখান থেকে আশপাশের ক্লাব বা দোকানদারেরা অবাধে হুকিং করে চলেছেন।’’ রাস্তার ধারে হেলে পড়া ত্রিফলাস্তম্ভ বিভিন্ন জায়গায় থাকলেও সেগুলিকে ব্যবসার কাজে লাগানোর ছবি দেখা গেল সালকিয়া চৌরাস্তায়। সেখানকার ত্রিফলার স্তম্ভে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে দোকানদারদের জামা, ব্যাগ-সহ নানা জিনিস। দোকানদারদের বক্তব্য, পুরসভার তরফে এ সব নিয়ে কোনও আপত্তি করা হয়নি বলে তাঁরা এ ভাবেই ঝুলিয়ে রাখেন।
কিন্তু, শুধু বৈঠকে নির্দেশ দিয়েই দায় সারবেন পুর কর্তৃপক্ষ? হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন বলেন, ‘‘আমরা ঠিকাদার সংস্থাগুলিকে বলেছিলাম যাতে ত্রিফলার যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। এখনও যখন সেই কাজ হয়নি বলে অভিযোগ পাচ্ছি, সে ক্ষেত্রে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করা হবে।’’