অসমাপ্ত: বাগনানের বিরামপুরে থমকে কাজ। ছবি: নুরুল আবসার
ল্যাটেরাইট বোল্ডার মিলছে না পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে। তার জেরে বাঁধ মেরামতির কাজ থমকে গিয়েছে হাওড়া জেলার বিভিন্ন এলাকায়। সেচ দফতর সূত্রের খবর, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন হাওড়ায় বোল্ডার আনার অনুমতি দিচ্ছে না। সেই কারণেই সমস্যা দেখা দিয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানেরচেষ্টা হচ্ছে।
সেচ দফতরের এক পদস্থ কর্তা জানান, তাঁরা বৃহস্পতিবারেই পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছেন। বিষয়টি ওই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভেবে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানেও বোল্ডার তোলা বন্ধ রয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, "ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যেমন নির্দেশ দেন, জেলায় সেই মতো পদক্ষেপ করা হয়।" জেলায় বোল্ডার তোলার অনুমতি এখনও দেওয়া হয়নি। এক সময়ে বেআইনি বোল্ডার কারবারের অভিযোগ ওঠে। তারপর থেকে বোল্ডার তোলা বন্ধ রয়েছে।
হাওড়ার বিভিন্ন এলাকায় নদীবাঁধ মেরামতির কাজ চলছে। তার মধ্যে রয়েছে বাগনানের বিরামপুরে রূপনারায়ণের বাঁধও। এই বাঁধ মেরামতি না হলে সামতাবেড় গ্রামে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির অস্তিত্ব বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা আছে। কিন্তু অর্ধেক কাজ হওয়ার পরে বাঁধ মেরামতি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কারণ, ল্যাটেরাইট বোল্ডারের জোগান না থাকা।
সেচ দফতর সূত্রের খবর, বছর দুয়েক আগেও একবার এই রকম সমস্যা দেখা দিয়েছিল। সেচ দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্তাদের হস্তক্ষেপে সেই সমস্যা তখনকার মতো মিটে যায়। তখন যে বোল্ডার পাওয়া গিয়েছিল, তাতেই বিরামপুরে রূপনারায়ণের বাঁধের অর্ধেক সংস্কার হয়। কিন্তু মাস ছয়েক আগে ফের একই সমস্যা হওয়ায় বাঁধের বাকি অংশের সংস্কার আটকে গিয়েছে বলে সেচ দফতর সূত্রের খবর। শ্যামপুরের আটান্ন গেটেও একই কারণে আটকে গিয়েছে দামোদরের বাঁধ সংস্কারের কাজ।
হাওড়ায় নদীবাঁধ সংস্কারের কাজে পশ্চিম মেদিনীপুরের ল্যাটেরাইট বোল্ডার ব্যবহার করা হয়। এর বিকল্পে ব্যবহার করা যেতে পারে বীরভূমের স্টোন বোল্ডার। সেচ দফতরের বক্তব্য, স্টোন বোল্ডারের দাম ল্যাটেরাইট বোল্ডারের চেয়ে বেশি। রাজ্য সেচ দফতরের এক পদস্থ কর্তা জানান, এমনিতেই দফতরের নুন আনতে পান্ত ফুরোনোর মতো অবস্থা। ঠিকা সংস্থাগুলির কোটি কোটি পাওনা মেটানো যাচ্ছে না। এই অবস্থায় বেশি টাকায় স্টোন বোল্ডার আনার পরিকল্পনা অলীক স্বপ্ন ছাড়া কিছু নয়। ল্যাটেরাইট বোল্ডার আনার অনুমতি না মিললে কাজ করাই যাবে না বলে তাঁর আশঙ্কা।