বাসের অপেক্ষায় মানুষ। —নিজস্ব চিত্র।
ইঙ্গিত আগেই মিলেছিল। শুক্রবার সকাল থেকে টের পাওয়া গেল আশঙ্কাটা অমূলক ছিল না। সমাবেশের চার দিন আগে থেকেই বাস কমেছিল হুগলি জুড়ে। আর শুক্রবার দিনভর রাস্তায় বাসের দেখা মিলল না বললেই চলে। হাওড়ায় সমস্যা অবশ্য বৃহস্পতিবার তেমন ছিল না। তবে এ দিন এই জেলার রাস্তাও ছিল ফাঁকা।
দুই জেলার অনেক বাসিন্দা যানজট ও যানবাহন কম পাওয়ার আশঙ্কায় ঘরে থাকাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। অনেকে আবার ঝামেলা এড়াতে অফিসেই থেকে গিয়েছিলেন। দুই জেলার বেশির ভাগ বেসরকারি বিদ্যালয় ছুটি ছিল। আর সরকারি বিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের হাজিরও ছিল কম। তবে যাঁরা এ দিন পথে বেরোতে বাধ্য হয়েছেন, তাঁরা বাস পেতে নাস্তানাবুদ হয়েছেন।
এ দিন সকাল থেকে ডানকুনি দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে ছিল সাজসজ রব। কারণ বাঁকুড়া, বীরভূম, বর্ধমান এবং মেদিনীপুর জেলার একটা বড় অংশের গাড়ি এই পথেই যায়। সকাল ৯ টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ডানকুনি টোল প্লাজা খুলে রেখে বাড়তি গাড়ির চাপ সামলানো হয়। চন্দননগর কমিশনারেটের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘এ দিন অন্তত দশ হাজর গাড়ির বাড়তি চাপ ছিল।’’ সরকারিঅফিসে কর্মীদের হাজিরা স্বাভাবিক (প্রায় ৮০-৮৫ শতাংশ) ছিল বলে জানান আরামবাগের মহকুমাশাসক সুভাষিণী ই।
রাজারহাটে বেসরকারি সংস্থায় মাস খানেক আগে কাজে যোগ দিয়েছেন অলীক বসু। ওই তরুণ বলেন, ‘‘একটা বেসরকারি রুটের বাসে যাতায়াত করি। সেটা না পেয়ে অনেক বেশি টাকা দিয়ে ট্যাক্সি চেপে যেতে বাধ্য হয়েছি।’’ বাস না পেয়ে হাওড়া থেকে হেঁটে চাঁদনি চকের অফিসে পৌঁছেছেন বছর পঞ্চাশের শুভাশিস দে নামে এক বেসরকারি অফিসের কর্মীও।
তবে দুই জেলারই রাস্তা ছিল ফাঁকা। দোকান, ব্যাঙ্ক-ডাকঘরেও গ্রাহকদের তেমন দেখা মেলেনি। এ দিন বাসের দেখা মেলেনি সাঁকরাইলের ১৬ নম্বর জাতীয় সড়কের টোলপ্লাজ়ার কাছেও। ধূলাগড়ের বাসিন্দা একটি বহুজাতিক সংস্থায় কর্মরত এক যুবক জানান, সমস্যা এড়াতে তিনি বৃহস্পতিবার রাত কাটিয়েছেন অফিসেই।
তবে ২১ জুলাই উপলক্ষে অতীতের আড়ম্বর কিছুটা ম্লান ছিল। আগে বড় শহরের প্রতি মোড় এবং মূল সড়কে মঞ্চ করে জলসত্রের ব্যবস্থা থাকত। মাইকে বাজত দেশাত্মবোধক গান। বড় পর্দায় নেত্রীর বক্তব্য শোনারও ব্যবস্থা থাকত। সে সব এ বার দেখা যায়নি।