—প্রতীকী চিত্র।
দিনে দিনে হাওড়ার বিভিন্ন ওয়ার্ডে বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। সরকারি হাসপাতালগুলিতে প্লেটলেটের অভাব দেখা দিয়েছে। কলকাতার সরকারি হাসপাতাল থেকে প্লেটলেট এনে চাহিদা সামলাতে হচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে। কারণ, রক্তদান শিবিরের সংখ্যা বর্তমানে কমে যাওয়ায় সমস্যা আরও বেড়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
হাওড়া জেলা হাসপাতাল সূত্রের খবর, দৈনিক ২৫-২৭ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় শয্যার পাশাপাশি প্লেটলেটেরও অভাব দেখা দিয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ক্লাব সংগঠনগুলি রক্তদান শিবির আয়োজন করে এই সঙ্কট সামাল দিতে এগিয়ে আসুক। শনিবারই ডেঙ্গি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে হাওড়ার শরৎ সদনে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে বৈঠক করেন পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের অতিরিক্ত সচিব জলি চৌধুরী।
হাওড়া পুরসভার তথ্য অনুযায়ী, সেখানে ৩৮তম সপ্তাহে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৮৯১ জন। ৩৯তম সপ্তাহে তা হয়েছে ১০৮৭। ৪০তম সপ্তাহে সেই সংখ্যা ১৩০০ ছাড়িয়েছে। এই পুর এলাকায় যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে, তা মানছেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারাও। বেশি ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিলছে ৩৯, ৪১, ৪, ৫ এবং ১৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। নতুন করে যে ওয়ার্ডগুলিতে ডেঙ্গি আক্রান্ত বাড়ছে, সেগুলি হল ২৫, ৪২, ৪৯ এবং ৫০ নম্বর।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলছেন, ‘‘হাওড়া জেলা হাসপাতালে প্রতিদিন ২৫-২৭ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত ভর্তি হচ্ছেন। আসছেন ম্যালেরিয়ার রোগীও। বুধবার মাত্র এক দিনে আট জন ম্যালেরিয়া আক্রান্ত ভর্তি হয়েছেন। ডেঙ্গি রোগীর পাশাপাশি অন্য রোগীদের পরিষেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।’’ ওই কর্তা জানান, ক্লাব বা সংগঠনগুলি রক্তদান শিবিরের আয়োজন না করায় হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে প্লেটলেট নেই বললেই চলে। বুধবার এসএসকেএম থেকে ২০ ব্যাগ প্লেটলেট আনিয়ে পরিস্থিতি সামলানো হয়েছে। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্লেটলেট সাধারণত চার দিনের বেশি রাখা যায় না। নষ্ট হয়ে যায়। রবিবার যে রক্তদান শিবির হয়, সেখান থেকে প্লেটলেট নিয়ে টেনেটুনে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চালানো যায়। পরের তিন দিন অর্থাৎ, শুক্র, শনি ও রবিবার চরম সঙ্কট হয়।
হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী জানান, পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের অতিরিক্ত সচিবের সঙ্গে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের প্রক্রিয়ার বিষয়ে কথা হয়েছে।
সরকারি আবাসনের চত্বর পরিষ্কার রাখার জন্য চিঠি দেওয়া হচ্ছে। তারা না পারলে পুরসভাকে জানাতে বলা হয়েছে। সুজয়বাবু বলেন, ‘‘ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে আবর্জনা পরিষ্কারে বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। আবর্জনা পরিষ্কার এবং সাফাই দফতরের কর্মীদের কাজ নিয়ে কিছু অভিযোগ এসেছে। প্রমাণ পেলেই সংশ্লিষ্ট কর্মীকে শোকজ় ও সাসপেন্ড করা হবে।’’