ভোটের দামামা বাজতেই চন্দননগরের বিভিন্ন এলাকায় দেওয়াল লিখন শুরু হয়ে গিয়েছে। ছবি: তাপস ঘোষ
কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা নয়, চন্দননগরের পুরভোটে একাই লড়ার সিদ্ধান্ত নিল বামেরা। পুরসভার ৩৩টি আসনেই আজ, বৃহস্পতিবার বামফ্রন্ট প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবে বলে জানা গিয়েছে। কংগ্রেস এখনও প্রার্থী তালিকা গুছিয়ে উঠতে পারেনি।
কয়েক মাস আগে বিধানসভা ভোটে বাম-কংগ্রেস জোট হয়েছিল। জোট ধরাশায়ী হয়। রাজ্যে একটি আসনও তারা পায়নি। পুরভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে গাঁটছড়ার বিষয়টি দলের স্থানীয় নেতৃত্বের উপরেই ছেড়েছে সিপিএম। সেইমতোই চন্দননগরে ওই সিদ্ধান্ত বলে বাম শিবিরের খবর।
আজ, শহরের ধারাপাড়ায় বৈঠকের পরে সন্ধ্যায় প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবে বামেরা। ফরওয়ার্ড ব্লক ২৫, ২৬ এবং ৩১ নম্বর আসনে লড়বে। বাকি ৩০টি আসনে সিপিএম প্রার্থী দেবে। এখানে বামফ্রন্ট ভোটে লড়তে চলেছে ‘সংযুক্ত নাগরিক কমিটি’র ব্যানারে।
সিপিএমের চন্দননগর এরিয়া কমিটির সদস্য হীরালাল সিংহ বলেন, ‘‘চন্দননগরবাসীকে দূর্নীতিমুক্ত স্বচ্ছ পুরবোর্ড উপহার দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য। মানুষ গতবার যে দলকে ভোট দিয়েছিল, দুর্নীতি এবং গোষ্ঠী-বিবাদে তারা পুরবোর্ড চালাতে পারেনি। আমাদের বিশ্বাস, মানুষ এ বার ভুল করবেন না। মানুষকে খুবই কষ্ট পেতে হয়েছে ওই ভুলের জন্য। পরিষেবা পাননি।’’
বিধানসভা ভোটে বামেদের সঙ্গে জোটের অন্যতম মুখ ছিলেন কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান। চন্দননগরে বামেদের সিদ্ধান্ত নিয়ে মান্নান মন্তব্য করেননি। তিনি শুধু বলেন, ‘‘চন্দননগরে আমাদের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হয়নি।’’
বাম-কংগ্রেসের সম্পর্কের রসায়ন নিয়ে চর্চা রয়েছে রাজনৈতিক মহলে। ভোটে তারা আসন সমঝোতার রাস্তায় হাঁটে কি না, তা নিয়ে ভোট-বাজারে কৌতূহল ছিল। কলকাতায় পুরভোটে শতাংশের হিসেবে ভোট বাড়ায় বামেরা উৎসাহিত। সেই কারণেই এখানে ‘একলা চলো’ নীতিতে তারা হাঁটছে বলে বাম শিবিরের একাংশের বক্তব্য।
আগামী ৩ জানুয়ারি মনোনয়ন পেশ করার শেষ দিন। পয়লা জানুয়ারি তাদের সব প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করবে বলে জানিয়েছে বামফ্রন্ট।
তৃণমূলও আজ প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে পারে। তৃণমূল সূত্রের খবর, প্রার্থী নির্বাচনের পুরো দায়িত্ব এ বার সামলাচ্ছেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। কলকাতায় পুরভোটে দলের সাফল্যের কথা তুলে ধরে তৃণমূলের শ্রীরামপুর-হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কলকাতার মতোই চন্দননগরেও ফলের ধারাবাহিকতা থাকবে। কারণ, মানুষ জানেন, তৃণমূল মানেই উন্নয়ন। সেই উন্নয়নে কলকাতার চেহারাই বদলে গিয়েছে। চন্দননগরের মতো ঐতিহাসিক এবং ঐতিহ্যবাহী শহরেরও সার্বিক উন্নয়ন একমাত্র তৃণমূলের পক্ষেই সম্ভব। মানুষ তাই তৃণমূলকেই বেছে নেবেন। বৃহস্পতিবার আমাদের প্রার্থী তালিকা ঘোষিত হবে, তেমনটাই এখনও পর্যন্ত ঠিক আছে।’’