হারানো পোষ্যের খোঁজে পোস্টার চুঁচুড়ার ঋতব্রত সেনগুপ্তের। —নিজস্ব চিত্র।
ওজন প্রায় ১০ কেজি। এসি ছাড়া তার ঘুম হয় না! শোওয়ার জন্য আবার আলাদা বিছানাও রয়েছে। গোটা ঘর জুড়েই ছিল তার রাজত্ব। একা একা কখনও বাড়ির বাইরেও যায়নি সে। তাই ‘বাবা-মা’র আদরে বড় হওয়া এ হেন ঘরকুনো ‘ছেলে’ টমু হঠাৎ হারিয়ে যাওয়াতেই মাথায় হাত পড়েছে চুঁচুড়ার দম্পতির।
প্রিয় পোষ্যের হারিয়ে যাওয়ায় শোকস্তব্ধ চুঁচুড়ার জোরাঘাট এলাকার বাসিন্দা ঋতব্রত সেনগুপ্ত এবং তাঁর স্ত্রী রূপা সেনগুপ্ত। এক বছর আগে বিড়ালছানাটিকে কুড়িয়ে পেয়েছিলেন তাঁরা। নাম রেখেছিলেন টমু। সেই থেকে খুব আদরযত্নে সন্তানের মতো করেই টমুকে বড় করেছেন সেনগুপ্ত দম্পতি। এখন সে রীতিমতো হুলো হয়ে গিয়েছে। ছোটখাটো বাঘের মতো চেহারা তার। তবে চেহারায় বড় হলে কী হবে, স্বভাবে প্রচণ্ড ভীতু সে! তাই একা একা বাড়ির বাইরে কখনওই বেরোত না টমু।
গত ১৭ জানুয়ারি বিকেলে সেই টমু হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যায়। তার পর থেকে আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না তার। টমুর সন্ধান পেতে শহরের আনাচকানাচে ‘সন্ধান চাই’ পোস্টার দিয়েছেন ওই দম্পতি। সমাজমাধ্যমেও পোষ্যের সন্ধান চেয়ে কাতর আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।
রূপার কথায়, ‘‘কয়েক দিন আগে টমুর শরীর খারাপ হয়েছিল। ডাক্তার দেখানো হল। চার হাজার টাকার ইসিজি, রক্তপরীক্ষা— সব হল। ওর নির্বীজকরণের জন্য ১৬ হাজার টাকার প্যাকেজ দিয়েছিলেন ডাক্তার। কিন্তু মাঝে ওর শরীর খারাপ হওয়ায় তা আর করানো হয়নি। টমু কখনও বাড়ির বাইরে যায়নি। ও রাস্তাঘাট কিছুই চেনে না। তাই খুব দুশ্চিন্তা হচ্ছে, কী ভাবে রাস্তা চিনে বাড়ি ফিরবে ও?’’ ঋতব্রত বলছেন, ‘‘আমার এক ছেলে। তার জন্যেও আমি কখনও ছুটি নিই না। কিন্তু টমু হারিয়ে যাওয়ায় আমার মাথা খারাপ হওয়ার অবস্থা। বাড়িতে খাওয়াদাওয়া প্রায় বন্ধ। আমাদের আরও একটি মেয়ে বিড়াল আছে। কয়েক দিন পরেই তার বাচ্চা হবে। সে জন্য সব রকম ব্যবস্থা করা আছে। কিন্তু এমন সময়েই নিখোঁজ হয়ে গেল টমু। চিন্তায় ঘুম আসছে না। কে জানে, আমরা যেমন ওকে খুঁজছি, টমুও হয়তো তেমন তার বাড়ি খুঁজছে!’’