আদালত থেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে প্রসেনজিৎ রায়কে। — নিজস্ব চিত্র।
স্ত্রীর সাহায্য নিয়ে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীর উপর যৌন নির্যাতন চালাতেন এক ব্যক্তি। সেই ঘটনায় ওই দম্পতিকে ২০ বছর কারাদণ্ড দিল আদালত। বৃহস্পতিবার এই সাজা শুনিয়েছেন চুঁচুড়ার পকসো কোর্টের বিচারক অরুন্ধতী ভট্টাচার্য চক্রবর্তী। বুধবার ওই দম্পতিকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। বৃহস্পতিবার শোনানো হয় সাজা। কারাদণ্ডের নির্দেশ শুনে কান্নায় ভেঙে পড়ে ওই দম্পতি। মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন দু’জনে।
চুঁচুড়া জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী শঙ্কর গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ২০২০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি বলাগড়ের বাকুলিয়া ধোবাপাড়া অঞ্চলে ঘটেছিল ওই ঘটনা। তিনি আরও জানান, গ্রামের স্কুলের সামনে বসে মুড়ি খাচ্ছিল তৃতীয় শ্রেণীর ওই ছাত্রী। স্কুলের পাশেই বাড়ি প্রসেনজিৎ রায় নামে এক যুবকের। অভিযোগ ওঠে, প্রসেনজিতের স্ত্রী ছাত্রীকে মাংস খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে তাঁদের বাড়িতে নিয়ে যান। বাড়িতে ওই শিশুর উপর যৌন নির্যাতন চালান তাঁর স্বামী প্রসেনজিৎ। আরও অভিযোগ, স্বামীকে এই অপকর্মে সাহায্য করেন তাঁর স্ত্রী। সরকারি আইনজীবী আরও জানিয়েছেন, এই ঘটনা বিরল। তাঁর মতে, মহিলাদের এই রকম দুষ্কর্মের প্রতিবাদ করতে দেখা যায়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে স্ত্রী নিজেই শিশুর উপর যৌন নির্যাতন চালাতে স্বামীকে সাহায্য করেছেন বলে জানিয়েছেন ওই সরকারি আইনজীবী।
এর পর ওই নির্যাতিত ছাত্রী স্কুলে গিয়ে ঘটনার কথা জানায় শিক্ষিকাদের নির্যাতিত ছাত্রী। স্কুলের তরফে খবর দেওয়া হয় ছাত্রীর বাড়ি এবং বলাগড় থানায়। ওই দিনই বলাগড় থানার পুলিশ প্রসেনজিৎ এবং তাঁর স্ত্রীকে গ্রেফতার করে। সরকারি আইনজীবী আরও জানিয়েছেন, বন্দি অবস্থায় একটি পুত্রসন্তান প্রসব করেন প্রসেনজিতের স্ত্রী। ওই মামলায় মোট ১৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। স্বামী এবং স্ত্রী দু’জনকে পকসো আইন-সহ নানা ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়। দু’জনকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। অনাদায়ে ২ মাস করে বিনাশ্রমে কারাদণ্ডের নির্দেশও দিয়েছেন বিচারক। পাশাপাশি, নির্যাতিতা শিশুকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সাহায্যও করা হয়েছে।