জরায়ুর স্বাস্থ্য ভাল রাখবে বিশেষ একরকম ডিটক্স পানীয়, বানানোর পদ্ধতি জেনে নিন। ছবি: ফ্রিপিক।
পলিসিস্টিক ওভারি ডিজ়িজ়কেই ছোট করে ডাকা হয় ‘পিসিওডি’। ‘পিসিওএস’-এর পুরো কথা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম। পিসিওডি এবং পিসিওএস দুই ক্ষেত্রেই সমস্যাটি হরমোনের তারতম্যের হাত ধরে ঘটে। পিসিওএস হওয়া মানেই সারা মুখে ব্রণ, ফুস্কুড়ি, অবাঞ্ছিত রোমের সমস্যা বাড়বে। সেই সঙ্গে ওজন বাড়তে থাকবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রতি পাঁচ জনে এক জন ভারতীয় নারীরই এই অসুখ রয়েছে। গবেষণা বলছে, অতিরিক্ত বাইরের খাওয়া, শরীরচর্চার অভাব, নেশার কারণে জরায়ুতে প্রচুর পরিমাণে ‘টক্সিন’ বা দূষিত পদার্থ জমে, যা পরবর্তী সময়ে গিয়ে হরমোনের তারতম্য ঘটাতে পারে। এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে, জরায়ুকে নিয়মিত ‘ডিটক্স’ করতে হবে। কী ভাবে তা সম্ভব?
‘পলি' শব্দটির অর্থ 'অনেক'। অসংখ্য সিস্ট ডিম্বাশয়ের উপর জমলে এই রোগ হয়। ছোট ছোট টিউমারের আকারে দেখতে এই সিস্টগুলি তরল বা অর্ধতরল উপাদান দিয়ে তৈরি। মূত্রনালির সংক্রমণ থেকেও হতে পারে সিস্ট। পিসিওডি হলে ঋতুচক্র অনিয়মিত হয়ে যায়। কখনও কখনও তা দীর্ঘায়িত হয়। সেই সঙ্গে পেটে অসহ্য যন্ত্রণাও হতে থাকে, পিসিওএস বা পিসিওডি আরও নানা অসুখ ডেকে আনে। হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে সে সব অসুখ মাথাচাড়া দিতে থাকে। মহিলাদের শরীরে পুরুষ হরমোনেরও আধিক্য হয়, ফলে কিছু পুরুষালি বৈশিষ্ট্যও দেখা দিতে থাকে। এই ধরনের রোগ থেকে রেহাই পাওয়ার মূল উপায় জীবনযাত্রার পরিবর্তন। মানসিক চাপ দূরে রাখা, অন্তত সাত-আট ঘণ্টা ঘুম, ওজন নিয়ন্ত্রণ, বাইরের খাওয়াদাওয়া বন্ধ করা এবং সঠিক চিকিৎসা। ডায়েট করতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই। সুষম খাবার তো বটেই, সেই সঙ্গেই জরুরি ডিটক্স পানীয়।
কী ধরনের পানীয় উপকারী?
জিরা, জোয়ান, শুকনো আদা ও ঘি দিয়ে তৈরি এক রকম পানীয় জরায়ু থেকে টক্সিন বার করতে পারে। এই পানীয় শরীরে প্রদাহনাশ করতেও সক্ষম। আয়ুর্বেদে এমন পানীয়ের উল্লেখ রয়েছে। জিরে আয়রনে ভরপুর, তা ঋতুস্রাবের সময়ে শরীরে আয়রনের ঘাটতি হতে দেবে না। জোয়ান হজমশক্তি বাড়াবে, শরীর থেকে টক্সিন বার করবে। শুকনো আদার প্রদাহনাশক গুণ রয়েছে আর ঘি হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখবে।
মহিলাদের ঋতুস্রাবজনিত সমস্যা, জরায়ুতে সিস্ট বা মূত্রনালির সংক্রমণের মতো সমস্যা থেকে রেহাই দিতে পারে এই ভেষজ পানীয়। নিয়ম মেনে খেলে পিসিওএসের ঝুঁকিও থাকবে না।
কী ভাবে বানাবেন?
আধ চা চামচ জিরা
আধ চা চামচ জোয়ান
১/৪ চামচ শুকনো আদার পাউডার
আধ চা চামচ ঘি
প্যানে ঘি গরম করে তাতে মশলাগুলি ভেজে নিতে হবে। এ বার এক থেকে দুই কাপ জল দিয়ে ফোটাতে হবে। মশলা ফুটে ঘন টনিকের মতো তরল তৈরি হলে গ্যাস বন্ধ করে ছেঁকে নিয়ে গরম অবস্থাতেই খেতে হবে। খালি পেটে এই পানীয় খেলে উপকার বেশি হবে। তবে দিনে এক বারই খেতে হবে।