স্ত্রী ঈপ্সা প্রিয়দর্শিনীকে খুনে অভিযুক্ত বিপ্লব পারিয়াদ। —ফাইল চিত্র।
অত্যধিক কাজের চাপ তো রয়েইছে। সেই সঙ্গে স্ত্রীর নানা ধরনের বায়না লেগেই থাকত। দুইয়ে মিলে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন বলে পুলিশের কাছে দাবি করলেন স্ত্রীকে খুনে অভিযুক্ত দুর্গাপুরের বিপ্লব পারিয়াদ। তাঁর আরও দাবি, ভুলবশতই স্ত্রীকে খুন করেছেন। যদিও বিপ্লবের এই যুক্তি মানতে নারাজ তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তাঁদের পাল্টা দাবি, বড়সড় ফ্ল্যাট কেনার টাকা চেয়েও তা না পাওয়ায় আক্রোশে স্ত্রী-কে খুন করেছেন বিপ্লব। দাবি-পাল্টা দাবির মধ্যে কোনটি এই খুনের আসল কারণ, তা উদ্ধারের চেষ্টা করছে কাঁকসা থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার দুর্গাপুর শাখার সহকারী ম্যানেজার বিপ্লবকে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতে নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে জেরায় বিপ্লবের দাবি, তাঁর সঙ্গে অন্য কোনও মহিলার সম্পর্ক নেই। স্ত্রী ঈপ্সা প্রিয়দর্শিনীরও বিবাহ বহির্ভূত কোনও সম্পর্ক ছিল না। তবে তাঁর স্ত্রীর একাধিক চাহিদা লেগেই থাকত। কাজের অত্যধিক চাপের মাঝে সেই আবদার মেটাতে গিয়েই নাজেহাল অবস্থা হয়েছিল তাঁর। সব মিলিয়ে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। এমনকি, ভুলবশতই স্ত্রী-র গলায় কুকুরের বকলস পেঁচিয়ে খুন করেছেন। কাজের চাপের সঙ্গে স্ত্রী-র বায়নাক্কা সহ্য করতে না পেরেই এই খুন বলে দাবি বিপ্লবের।
বস্তুত, রবিবার এই খুনের ঘটনায় বিপ্লবকে গ্রেফতার করা হলেও সংবাদমাধ্যমের কাছে তিনি একই দাবি করেছিলেন। জানিয়েছিলেন, ঈপ্সার নানা আবদার লেগেই থাকত। বিপ্লব বলেছিলেন, ‘‘হঠাৎ হঠাৎ নানা রকমের বায়না করত ঈপ্সা। বুঝতে পারতাম না, ওর মাথায় কী ভূত চাপত। আমাকে বিদেশে ঘুরতে নিয়ে যেতে বলেছিল। আমরা মালয়েশিয়া গিয়েছিলাম। ওখানে গিয়ে আমরা দু’জনে ট্যাটুও করেছিলাম। গাড়ি চালানো শেখানোর কথা বলেছিল। তারও ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম। ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ের কোর্স করাতে বলেছিল।’’
প্রসঙ্গত, রবিবার রাতে ঈপ্সাকে খুনের পর কাঁকসা থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন বিপ্লব। এর পর তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আদতে ওড়িশার কটকের বাসিন্দা বিপ্লব কর্মসূত্রে তাঁর স্ত্রী-কে নিয়ে কাঁকসায় একটি ভাড়াবাড়িতে বসবাস করতেন।
পুলিশের কাছে বিপ্লবের যাবতীয় দাবি নস্যাৎ করে দিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ঈপ্সার মা-বাবা। তাঁদের পাল্টা দাবি, ওড়িশায় একটি বড় ফ্ল্যাট কেনার জন্য ঈপ্সার কাছে বার বার টাকার চাইতেন বিপ্লব। এমনকি, শ্বশুর-শাশুড়ির কাছেও বহু বার সে দাবি করেছেন। কিন্তু সে টাকা না পাওয়ায় ঈপ্সাকে খুন করেন বিপ্লব।